করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ফেরা ব্রিটিশ নারীর গল্প



Odd বাংলা ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। কিন্তু তারপরও সংক্রমিত মানুষের মধ্যে অনেকেই সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই উপসর্গ তেমন গুরুতর ছিল না। কারও কারও দেহে কোনও উপসর্গই দেখা যায়নি। কিন্তু অনেকের দেহে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এদেরই একজন জেসি ক্লার্ক। বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত জেসির করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ফেরার গল্প রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। জেসি ক্লার্ক জানতেন তিনি করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তিনি কঠিন এক কিডনির রোগে ভুগছিলেন। পাঁচ বছর আগে তার একটি কিডনি ফেলে দিতে হয়েছিল। 

 ২৬-বছর বয়সী শেফিল্ড শহরের এই বাসিন্দা যেদিন থেকে প্রচণ্ডভাবে কাশতে শুরু করলেন এবং তার শ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে লাগলো, তখন তিনি বুঝলেন পরিস্থিতি গুরুতর। আর এর কয়েকদিনের মধ্যে তার হাঁটাচলার শক্তিও থাকলো না। ‘আমার বুকের পাঁজর, পিঠ এবং পেটে প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দিয়েছিল,’ বলছিলেন জেসি। ‘মনে হচ্ছিল আমার সারা শরীরে কেউ খুব করে পিটিয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যেদিন ব্রিটেনে লকডাউন ঘোষণা করলেন - তার দুদিন পর জেসির বয়ফ্রেন্ড টম তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। কিন্তু নিরাপত্তার খাতিরে জেসিকে সাথে সাথে আলাদা ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ‘একা একা থাকতে আমার খুব ভয় করতো। কিন্তু আমার অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে আমি চাইতাম কেউ আমাকে একটু সাহায্য করুক,’। জেসি বলছেন, ‘আমাকে একটি সবুজ মাস্ক পরিয়ে দেওয়া হলো। এরপর আমাকে যে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হলো সেখানে শুধুমাত্র কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছিল। ওয়ার্ডে প্রতিটা বেড ছিল আলাদা। প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছিল।’ ‘আমার করোনাভাইরাস পরীক্ষা হয়নি। তবে ডাক্তার আমাকে জানালেন সবার পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না। কারণ আমার যে করোনাভাইরাস হয়েছে তা দেখেই বলে দেওয়া যায়। ডাক্তার আমাকে বললেন, আমার ফুসফুসে প্রদাহের জন্যই আমার শরীরে ব্যথা হচ্ছিল। তিনি বললেন, আমাকে স্বেচ্ছায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে হবে এবং পেইনকিলার খেতে হবে।’ ‘এর আগে আমি কখনই শ্বাসকষ্টে ভুগিনি। কিন্তু আর শ্বাস নিতে পারবো কিনা, কিংবা এটাই এই ভাইরাসের স্বাভাবিক উপসর্গ কিনা, সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকা খুবই ভয়ের ব্যাপার।’ জেসিকে ছয় ঘণ্টা হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। কিন্তু বাড়ি ফেরার পাঁচদিন পরও জেসি ঠিকমত হাঁটাচলা করতে পারছিলেন না। তার শরীর এতটাই দুর্বল হয়ে গিয়েছিল যে তিনি দিনে ১৮ ঘণ্টা করে ঘুমাতেন। ‘বয়স যাদের কম তাদের কারো কারো মনে এই বিশ্বাস তৈরি হয়েছে যে করোনাভাইরাস তাদের ছুঁতে পারবে না,’। জেসি বলছেন, ‘কিন্তু এখন সেই ধারণা পাল্টে গেছে। এখন তারা একে গুরুত্বের সাথেই নিচ্ছে।’
Blogger দ্বারা পরিচালিত.