রামায়ণে বাল্মীকি যে প্রশ্নগুলির কোনও উত্তর দিয়ে জাননি, আপনি জানুন সেই অজানা কথাগুলি
Odd বাংলা ডেস্ক: মহাকাব্য রামায়ণ রচনা করেছিলেন মহর্ষি বাল্মিকী। কিন্তু, পরবর্তীকালে এই মহাগ্রন্থ আরও অনেকেই লিখেছেন। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তুলসিদাস, কৃত্তিবাস, মরাঠি সন্ত একনাথ।
বিভিন্ন লেখকের লেখায় গল্প-কাঠামো এক থাকলেও, তাঁদের লেখায় অনেক তথ্যই মূল রামায়ণ-এর থেকে আলাদা। তেমনই ১০টি জানা-অজানা তথ্য রইল এখানে—
১। কুম্ভকর্ণ কেন এতো ঘুমাতেন— মহাকাব্যের এই চরিত্রটি সকলের থেকে বেশ আলাদা। সাতে-পাঁচে না গিয়ে তিনি থাকতেন নিজের মতেই। রাক্ষস হলেও, কুম্ভকর্ণের চরিত্র ছিল বেশ ভাল। কথিত, তাঁর উপাসনায় ব্রহ্মা খুশি হয়ে তাঁকে বর দিতে চাইলে, ‘ইন্দ্রাসন’ বলতে গিয়ে তিনি চেয়ে বসেন ‘নিদ্রাসন’। দেবী সরস্বতীর সাহায্যেই ছলনা করেন এমন কীর্তি ঘটান দেবরাজ ইন্দ্র।
২। বাল্মীকি রামায়ণে ‘লক্ষ্মণরেখা’-র উল্লেখ নেই— বনবাসে থাকাকালীন, সীতাকে বিপদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য, লক্ষ্মণ তাঁদের কুঁড়েঘরের চারপাশে রেখা এঁকে দিয়েছিলেন। কিন্তু, রাক্ষসরাজ রাবণ, ছলনা করে সেই রেখার বাইরে বের করে আনেন এবং হরণ করে নিয়ে যান লঙ্কায়। কিন্তু, বাল্মীকি রামায়ণে এই রেখার কোনও উল্লেখই নেই। তবে তুললিদাসের ‘রামচরিতমানস’-এর ‘লঙ্কাকাণ্ড’-য় লক্ষ্মণরেখার কথা বলা হয়েছে।
৩। বনবাসের ১৪ বছর লক্ষ্মণ ঘুমাননি— বনবাসের প্রথম রাতেই তিনি নিদ্রার দেবীকে অনুরোধ করেছিলেন, তাঁকে ১৪ বছর জাগিয়ে রাখতে। কারণ, তাঁর প্রাণপ্রিয় ভ্রাতা ও ভ্রাতৃবধূ যখন বিশ্রাম নেবেন, তাঁদের সুরক্ষার জন্য তিনি যেন সর্বদা সজাগ থাকতে পারবেন। লক্ষ্মণের ভাগের ঘুম তাই ঘুমিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী ঊর্মিলা। এই কারণে, লক্ষ্মণের নাম হয় ‘গুড়াকেশ’, যার অর্থ ‘যিনি ঘুমকে জয় করতে সক্ষম’। এবং এই ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় তুলসিদাসের রচনায়।
৪। শ্রীরামের মৃত্যু হয় কী ভাবে— রামচন্দ্র ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর অবতার। ধরাধামে যে কর্মের জন্য তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন তা শেষ হলে, দুই ছেলে লব ও কুশকে সব দায়িত্ব দিয়ে, তিনি সরযূ নদীতে আত্মবিসর্জন।
৫। রামের সেতুর অস্তিত্বর কথা স্বীকার করেছে নাসা-ও— বাল্মিকী রামায়ণ অনুসারে রামের জন্ম হয়েছিল প্রায় ৮৮০ হাজার বছর আগে। মহাগ্রন্থের ঘটনাবলি অনুযায়ী, সীতা উদ্ধারের জন্য সাগর পেরতে হয় রামকে। মাত্র পাঁচ দিনের কঠোর পরিশ্রমে, ভারত ও তৎকালীন লঙ্কাকে পাথরের সেতু দিয়ে জুড়েছিল বানরসেনা, এমনটাই জানায় মহাকাব্য রামায়ণ। ২০০৩ সালে, এক দল বৈজ্ঞানিক প্রমাণ করেন যে, রামেশ্বরমের সেতুটি রামায়ণের যুগেরই। ‘কার্বন ডেটিং’-এই তা প্রমাণিত হয়।
Post a Comment