২০ বছর ধরে নদী পার হয়ে স্কুলে পড়াতে যান এই শিক্ষক
Odd বাংলা ডেস্ক: কেরালার মালাপুরাম গ্রামের কাদালুন্দিপুঝা নদীর পরিচিত দৃশ্য, রোজ সকাল ৯টার সময় কোমরে টিউব বেঁধে সাঁতরে নদী পার হচ্ছেন একজন মানুষ এবং হাত উচু করে ধরা কাপড়চোপড় আর জুতা। সেই ব্যক্তির নাম আব্দুল মালেক। তিনি কেরালার মুসলিম লেয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণিতের টিচার। এই মহান শিক্ষক আব্দুল মালেক তিনি দীর্ঘ ২১ বছর ধরে একইভাবে একই সময়ে সাঁতরে নদী পার হন তার গন্তব্য বিদ্যালয়ে যাওয়া।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কোমড়ে টিউব জড়িয়ে হাতে ব্যাগ নিয়ে শিক্ষক রোজ স্কুলে যান শিক্ষকতা করানোর জন্য এবং এই ২১ বছরে ১ দিনও তিনি বিদ্যালয় হতে ছুটি নেন নি। তার বাসা হতে স্কুলের দুরুত্ব প্রায় ১২ কিমি। তার বাসা হতে স্কুলে যাওয়ার মোট দুটি রাস্তা রয়েছে। একটি রাস্তা বাসা হতে ২ বার বাস বদল করে যেতে হয় । তারপর আবার পায়ে হাঁটা পথ।
আর একটি পথ বাসা হতে বেড়িয়ে ১০ মিনিটের হাঁটাপথে কাদালুন্দিপুঝা নদীর পাড়ে যেতে হয়। তারপর ওই নদী সাঁতরে অল্প কিছু পথ হাঁটতে হয়। এরপর পৌঁছে যান তার কর্মস্থলে। শিক্ষক আব্দুল মালিক প্রথমদিকে বাসে করে স্কুলে যেতেন। এতে তার বেশ সময় লাগত এবং তা রীতিমত কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। তাই তিনি তার স্কুলের শিক্ষকদের পরামর্শে নদী পথে স্কুলে যাওয়ার সীদ্ধান্ত নেন।
আব্দুল মালেক জানান, বাসে করে যেতে হলে বেশিরভাগ সময়ই নিদৃষ্ট সময়ে স্কুলে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। এতে তার প্রচুর সময় অপচয় হতো। তিনি এই ২০ বছর ধরে নদীর তীরে এসে প্রথমে তিনি তার পড়নের কাপড় বদলে তোয়ালে পরিধান করেন আর অন্য কাপড়গুলো প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে হাতে নেন।
এরপর কোমড়ে টিউব জড়িয়ে এক হাতে তার জুতা, কাপড়ের প্লাস্টিকের ব্যাগ আর এক হাত দিয়ে তিনি সাঁতরে নদী পার হন। দীর্ঘ এই ২১ বছরে তিনি অন্য কোন চাকুরির চেষ্টা করেন নি কিংবা চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবেননি।
আব্দুল মালেক জানান, তিনি যা বেতন পান তা নিয়েই তিনি খুশি। অনেকে শিক্ষক মালেক বলেন আপনি এখন আর যুবক নন তবে এত কষ্ট করে কেন বিদ্যালয়ে যান? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘প্রতিদিন সাঁতার কাটলে নিজেকে অনেক ঝরঝরে শরীর ও শক্তিশালী মনে হয়। তাই আমি ঠিক করেছি অবসরের পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত এভাবেই সাঁতার কেটে নদী পার হয়ে আমি আমার কর্মস্থলে যাব।
Post a Comment