উহান ছাড়ছেন হাজারো মানুষ
Odd বাংলা ডেস্ক: গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহর থেকেই ছড়িয়ে পড়েছিল করোনাভাইরাস। এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার শহরটি ৭৬ দিন ধরে লকডাউন হয়েছিল। বুধবার উঠল সেই লকডাউন। তারপরেই হাজার হাজার মানুষ নেমে এসেছেন রাস্তায়। শহরের বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশন এতদিন ছিল নীরব। আর আজ সেখানে বহু মানুষের ভিড়। অনেকেই শহর ছেড়ে পালাচ্ছেন। তাদের অনেকের পরনে হেজমত স্যুট। করোনা সংক্রমণ আটকানোর জন্য তারা ওই বিশেষ পোশাক পরেছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, উহান শহরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে মারা গেছেন আড়াই হাজারের বেশি। চীনে মহামারিতে যতো মানুষ মারা গেছেন, তাদের ৮০ শতাংশ উহান শহরের। প্রায় এক মাস ধরেই অবশ্য সেখানে মহামারির প্রকোপ কমছে।
গত ২১ দিনে শহরে মাত্র তিনজন ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে গত ১৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন দু’জন। চীন সরকার জানিয়েছে, বুধবার ট্রেনে চড়েই অন্তত ৬৫ হাজার মানুষ উহান ছেড়ে যাবেন। এতদিন শহরের সীমানায় ব্যারিকেড করা ছিল। সেগুলি সরিয়ে নিতেই রাস্তায় দেখা যাচ্ছে বহু বাস ও গাড়ি।
উহানের রেলস্টেশনে দাঁড়িয়েছিলেন ৩৯ বছর বয়সী হাও মেই। তিনি বলেন, আপনারা ভাবতেই পারবেন না আমরা কী পরিমাণে উত্তেজিত। আমি তো ভোর ৪টায় উঠে পড়েছি। আমার ছেলে-মেয়েরাও খুব উত্তেজিত। আমার মা এতদিন বাইরে ছিলেন। তিনি আজ ফিরছেন।
ইয়াও নামে ২১ বছরে এক যুবক যাচ্ছেন সাংহাইতে। সেখানে এক রেস্তোরাঁয় তিনি কাজ করেন। তার কথায়, মহামারিতে উহানের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। উহানের মানুষকে বিরাট মূল্য দিতে হয়েছে। এতদিনে লকডাউন উঠে গেল। আমরা খুব খুশি।
রেলস্টেশনে সরকার থেকে মাইকে বলা হচ্ছে, ‘উহানকে এখন থেকে আমরা বলব সিটি অব হিরোজ। বীরদের শহর।’ উহানে করোনা ভয়াল থাবা বসালেও চীনের অন্যান্য প্রান্তে কিন্তু ছবিটা আলাদা। দেশের উত্তরে হেইলংজিয়াং প্রদেশে মঙ্গলবারই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ জন। ওই প্রদেশটি রাশিয়ার সীমান্তে অবস্থিত। রাশিয়া থেকেই অনেকে ওই রোগ নিয়ে এসেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
হেইলংজিয়াং প্রদেশের সুইফেনহি শহরে বুধবার উহানের মতোই কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। নগর প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে, প্রত্যেক বাসিন্দাকে থাকতে হবে ঘরে। প্রতিটি পরিবার থেকে একজন তিনদিন পর পর বের হতে পারবেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করেই তাকে বাড়িতে ফিরতে হবে।
Post a Comment