ধীরে ধীরে ‘পাথর’ হয়ে যেতে থাকে শরীর, অজানা অসুখে ছড়াচ্ছে আতঙ্ক
Odd বাংলা ডেস্ক: ছেলের ডান থাইতে একটা শক্ত ‘লাম্প’ বা মাংসপিণ্ড লক্ষ করেছিলেন বাবা। ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি, কী ভয়ঙ্কর অসুখ বাঁধিয়ে বসেছে সে। ক্রমে যত সময় গেল তত পরিষ্কার হল বিষয়টা। যত সময় যাচ্ছে ধীরে ধীরে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ পাথররে মতো শক্ত হয়ে যাচ্ছে! ‘স্টিফ স্কিন সিনড্রোম’ নামের এক বিচিত্র অসুখে আক্রান্ত হয়েছে বারো বছরের ছেলেটি।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘লাইভসায়েন্স’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে এই আশ্চর্য অসুখ সম্পর্কে। জেনেটিক অ্যান্ড রেয়ার ডিজিসেস ইনফরমেশন সেন্টার বা গার্ড-এর মতে, বিরল এই অসুখটি জেনেটিক মিউটেশনের ফলে হয়। এবং এখনও পর্যন্ত এই অসুখের কোনও নিশ্চিত চিকিৎসার কথা সেভাবে শোনাতে পারেনি চিকিৎসক মহল।
বারো বছরের জাইডেন রজার্স নামের ওই ছেলেটির শরীরে অসুখটি ক্রমেই আরও সমস্যার সৃষ্টি করে চলেছে। একে তো যন্ত্রণা, তার উপরে একে একে কোমর, পাকস্থলী সবই হয়ে যাচ্ছে পাথরের মতো শক্ত। বুকের কাছে পৌঁছে গিয়েছে অসুখটি। ফলে শ্বাসকষ্টও শুরু হয়েছে।
এই অসুখে আক্রান্তদের একটা বড় অসুবিধা হল, ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন অংশের অস্থিসন্ধি নাড়ানো কঠিন ও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমনকী, চোখের পেশীও শক্ত হয়ে চোখের পাতা ফেলাও কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়তে থাকে!
এই অসুখের কোনও চিকিৎসাই কি নেই? একটি ইমিউন-সিস্টেম সাপ্রেসিং ড্রাগ রয়েছে, যেটা দিয়ে নাকি পরিস্থিতির উন্নতি হলেও হতে পারে। কিন্তু সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। তবে অতীতে দু’জন রোগী নাকি ওই ড্রাগের সাহায্যে অনেকটাই রোগমুক্ত হতে পেরেছেন।
আপাতত রজার্সের বাবা-মা অধীর অপেক্ষায়। তাঁদের ছেলেও ওই ড্রাগ বা অন্য কোনও ওষুধের উপায়ে নিশ্চয়ই সুস্থ হয়ে উঠুক, এই তাঁদের প্রার্থনা। বিরল ওই অসুখের ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য রজার্সের বাবা-মা একটি তহবিলও গঠন করছেন। সেখানে দান করেছেন অনেকেই।
আপাতত ছোট্ট রজার্সের এই বিশ্রী অসুখের মুক্তির অপেক্ষায় সবাই।
Post a Comment