বাবা লোকনাথ সম্পর্কে অজানা তথ্য, সকালে জানলে আজ সারাদিন যাবে ভালো



Odd বাংলা ডেস্ক: ইংরেজী ১৭৩০ ও বাংলা ১১৩৭ সনের কথা ৷ আগের নাম যশোহর জেলা ও বর্তমান নাম ২৪ পরগনা জেলায়  বরাসাত মহকুমা এর চৌরশি   চাকলা নামক গ্রামে শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ ব্রক্ষচারী জম্নগ্রহন করেন৷রামনারায়ন ছিলো তার বাবার নাম৷তার মায়ের নাম ছিলো কমলা দেবী৷ লোকনাথের বাবা ছিলেন একজন ধার্মিক ব্রাক্ষন  ৷ বাবা মায়ের চতুর্থ সন্তান ছিলো শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ৷ সে সময়কার মানুষ জনদের ধারনা ধ্যান ছিলো  যে কোনো এক পুত্রকে যদি সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহন করা যায় তাহলে তার বংশ উদ্ধার হয়ে যাই৷ সেজন্য রামনারায়ন তার প্রথম সন্তান থেকে সব ছেলেকে সন্ন্যাস গ্রহন করানোর জন্য চেষ্টা করছিলেন৷কিন্তু কমলার দেবীর জন্য তা আর হয়ে উঠে নি৷কিন্তু চতুর্ধ সন্তানের বেলায় সেটা আর হয় নি৷ এজন্য শ্রী রামনারায়ন শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথকে  সন্নাস গ্রহন করিনোর জন্য  ১১ বছরের মধ্যে উপনয়নের কার্য সমাপ্ত করেন৷পাশ্ববর্তী গ্রামের জৌতিময় দেহধারী ভগবিন গাঙ্গুলির হাতে তুলে দেন বাবা লোকনাথকে ৷এই সময় শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথের সাথে সঙ্গী হন বাবা লোকনাথের বাল্যকালের বন্ধু বেনীমাধব৷লোকনাথের নাম দিয়েছিলেন ভগবান গাঙ্গুলী নিজেই৷৷উপনয়ন শেষে লোকনাথ বেনীমাধব ও ভগবিন গাঙ্গুলী পদযাত্রা শুরু  করে বিভিন্ন গ্রামে শহরানদনদী জঙ্গল পার করে প্রথমে কালী ঘাটে গিয়ে  গুরুর আদেশে যোগসাধনাও ব্রত শেষ করেন৷এবং কিছুদিনের মধ্যেই বাবা লোকনাথ ব্রক্ষজ্ঞান লাভ করেন৷তার তিনি দেশ ভ্রমন শুরু করেন৷প্রথমে যান হিমালয়ে হিমালয়ের পরে যান কাবুল দেশে ৷সেখানে মোল্লা সাদী নামে এক মুসলমানদের সঙ্গে কোরিন ও বেদএবং আরো অনেক শাস্ত্র নিয়ে  আলোচনা শুরু করেন৷এবারে গুরুকে বাদ দিয়ে বেনীমাধব ও তিনি  আবারও দেশ ভ্রমনে অগ্রসর হলেন৷প্রথমে যান আফগানে তারপরে যান পারস্য তারপর আরব মক্কা মদিনা মক্কেশ্বর তীর্থস্থান  তুরস্ক গ্রীস সুই জারলেন্ড সহ বিভিন্ন দেশের অনেক স্থানে ভ্রমন করেন এবং পদেশের ভিতর হরিদ্বার, হিমালয় তীর্থ, বদ্রীনাথ, সুমেরু পর্বত, কাশিধাম ও কাবুল পরিদর্শন করেন। দিনে দিনে গুরুর বয়স একশত বছর ও শিষ্যদের বয়স পঞ্চাশ বছর হলো। গুরুদেব ভগবান গাঙ্গুলী শিষ্য দুজনকে শ্রী তৈলঙ্গস্বামীর (হিতলাল নামে যিনি পরিচিত) হাতে তুলে দিয়ে পরলোক গমন করেন। এবার লোকনাথ ও বেনীমাধব সুমেরু থেকে চন্দ্রনাথ পর্বতে আসেন। সেখান থেকে লোকনাথ ও বেনীমাধব বিভক্ত হয়ে যান। বেনীমাধবের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে লোকনাথ একা একা চলে আসেন কামাখ্যা হয়ে ত্রিপুরা জেলার দাউদকান্দি গ্রামে। সেখানে কোন এক সুভক্ষণে দেখা হয় ডেঙ্গু কর্মকারের সঙ্গে। ডেঙ্গু কর্মকারের বাড়ি কিছু দিন অবস্থান করার পর তারই সঙ্গে নারায়নগঞ্জের বারদীতে আসেন।

বারদীর জমিদার নাগ মহাশয় বাবার কথা শুনে বাবার থাকার জন্য জমি দান করেন এবং বাবা নিজ পছন্দের জমিতে মহা ধুম-ধামের সাথে আশ্রম স্থাপন করেন। বাবার আশ্রমের কথা শুনে দেশ-দেশন্তার হতে বহু ভক্তগন এসে ভিড় জমাতে থাকেন। ভক্তগনের মনের অভিব্যাক্তি “তারা বাবার কাছে যাই চায় তাই পায়। এ ভাবে একটু সময়ের ব্যাবধানেই বাবার আশ্রম তীর্থভূমিতে পরিণত হয়। কোন এক সময় ভাওয়ালের মহারাজ বাবার অনুমতি নিয়ে বাবার ফটো তুলে রাখেন। যে ফটো বর্তমান ঘরে ঘরে পূজিত হয়। এ ভাবে ঘনিয়ে আসে বাবার মহাপ্রয়ানের দিন।

সে দিন ছিল ১৯শে জৈষ্ঠ, রবিবার বাবা নিজেই বললেন তার প্রয়ানের কথা। এ কথা শুনে বহু নর-নারী এলো বাবাকে শেষ দর্শন করার জন্য। বাবার শেষ বাল্যভোগ নিয়ে আসেন আশ্রম মাতা। বাল্যভোগ প্রসাদে পরিণত হওয়ার পর ভক্তগন মহাআনন্দের সথে তা ভক্ষণ করিল। প্রসাদ ভক্ষণ হওয়ার পর বাবা মহাযোগে বসেন। সবাই নির্বাক অবাক হয়ে অশ্র“ সজল চোখে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকেন বাবার দিকে কখন বাবার মহাযোগ ভাঙ্গবে। কিন্তু বাবার ঐ মহাযোগ আর কখনও ভাঙ্গেনি। শেষ পর্যন্ত ১১. ৪৫ মিনিটে দেহ স্পর্শ করা হলে দেহ মাটিতে পড়ে যায়। ভক্তগণ কাঁদতে থাকে উচ্চস্বরে এবং বাবার শরীর মন্দির থেকে তুলে এনে বিল্বতলে রাখা হয়। দেহ সৎকারের জন্য আনা হয় থরে থরে ঘৃত ও চন্দন। বাবার কথা মতে (পূর্বের) বাবার দেহ আশ্রমের পাশে চিতায় রেখে দাহকৃত সমাপ্ত হয়। এই ধরাধাম থেকে চলে গেলেন লোকনাথ বাবা। কিন্তু রেখে গেলেন বাবার পূর্ণ স্মৃতি। আর রেখে গেলেন বাবার অমর বাণী।

"রণে বনে জলে জঙ্গলে
যখনই বিপদে পড়িবে
আমাকে স্মরণ করিও
আমিই রক্ষা করিব"।


পরম পুরুষ বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী তাঁর ভক্তদের জন্য যেসব অমৃত বাণী দিয়ে গেছেন সেগুলো অমূল্য রত্ন বিশেষ। তাঁর এ অমৃত বাণী সংসারক্লিষ্ট মানুষের মনে শান্তি ও স্বস্তি আনবে, এই আশা নিয়েই সকলের জন্য তাঁর অসংখ্য অমৃত বাণী থেকে কিছু বাণী --

প্রত্যক্ষেই হোক্ আর পরোক্ষেই হোক্ বাক্য -মন-ইঙ্গিত দ্বারা কারও নিন্দা করা উচিত নয়।
নিজেকে বড় না করে তাঁকে বড় কর, নিজে কর্তা না সেজে তাঁকে কর্তা জ্ঞান করার চেষ্টা কর, তাহলেই ত্যাগ আসবে।
যে কারনে মোহ আসে, তা যদি জানা থাকে, আসতে না দিলেই হয়।
বাক্যবাণ ,বন্ধু -বিচ্ছেদবাণ এবং বিত্ত-বিচ্ছেদবাণ এই তিনটি বাণ সহ্য করতে পারলে মৃত্যুকে জয় করা যায়।
আমার দান ছড়ানো পড়ে আছে, কুড়িয়ে নিতে পারলেই হলো।
অন্ধ সমাজ চোখ থাকতে ও অন্ধের মতো চলছে।
যা মনে আসে তাই করবি, কিন্তুু বিচার করবি। এবং ত্রোধ ভাল, কিন্তুু ত্রোধান্ধ হওয়া ভাল নয়।




জয় বাবা লোকনাথ



আমার পূর্ণ বিশ্বাস আপনারা এখান থেকে অনেক অজানা ধর্মীয় শাস্ত্র তথ্য জানতে পারবেন! আপনার জীবনই পরিবর্তন নেমে আসতে পারে। এই পেজের সাথে যুক্ত থেকে।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.