সেই রাতে পাকিস্তানের সেনারা পুরুষদের লুঙ্গি খুলে দেখেছিল তারা হিন্দু কিনা



Odd বাংলা ডেস্ক: খ্রিস্টান ধর্মের একজন পাকিস্তানি নাগরিক। একাত্তর সালে মুুক্তিযুুদ্ধের সময় বাংলাদেশে এসেছিলেন খবর সংগ্রহ করতে। তারাশঙ্করের ‘১৯৭১’ নামক বইয়ের ‘একটি কালো মেয়ের কথা’র অন্যতম চরিত্রের হৃদয়খচিত বয়ান। তার মতো শত শত বিদেশি সেদিন এ দেশের মানুষের স্বাধীনতার উচ্চাশা আর সংগ্রাম দেখে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের ত্যাজে সব ভুলে সেও স্বাধীনতাকামী হয়েই সামনে হেঁটেছিল। এখানেই বাঙালির বিজয়ের অন্যান্যতা। আর তা আবেগ ও বাস্তবতার শব্দ মিশেলে উপস্থাপান করেছেন বাংলা ভাষার একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।

এই সাংবাদিকের মতোই অনেক অন্যান্য ধর্মের মানুষ তখনও বাংলাদেশে ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের সেনারা তাদের ওপর কীভাবে অত্যাচার করেছিল সেটা তিনি নিজেই উল্লেখ করেছিলেন। পাকিস্তানেরই একটি সংবাদ মাধ্যম দ্য ডনে প্রকাশ পায় এই ছবিটি। যেখানে বলা হয় পাক সেনা প্রত্যেকের লুঙ্গি তুলে দেখত যে তারা ভারতীয় হিন্দু গুপ্তচর কিনা। 

‘অপারেশন সার্চলাইটের’ নামে পাকিস্থানি বাহিনীর অতর্কিত সেই হামলায় মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠে সমগ্র ঢাকা শহর। পৃথিবীবাসী অবাক হয়ে দেখেছে ধর্মের নামে বর্বর হানাদার বাহিনী কিভাবে একরাতে প্রায় অর্ধলক্ষ ঘুমন্ত বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদক সাইমন ড্রিং-এর বর্ণনায় জানা যায়, ২৫ মার্চ ৭১-এ রাত দশটার দিকে শুরু হয় সেই পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ। যদিও পরিকল্পনা অনুযায়ী জিরো আওয়ার বা আক্রমণের নির্ধারিত সময় ছিল রাত একটা। মধ্যরাতে ঢাকার পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশলাইন, নীলক্ষেত এলাকায় আক্রমণ চালায় হানাদাররা। ঢাকার ইপিআর সদর দপ্তর পিলখানার বাঙালি সৈনিকদের নিরস্ত্র করে এবং ইপিআর দফতরের ওয়্যারলেস ব্যবস্থা দখল করে নেয় ২২তম বেলুচ রেজিমেন্ট। অন্যদিকে ১৮ নং পাঞ্জাব, ৩২ নং পাঞ্জাব ও ২২ নং বেলুচ রেজিমেন্ট ট্যাংক ও মর্টার হামলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। হানাদার বাহিনীর মেশিনগানের গুলি, ট্যাংক-মর্টারের গোলা আর আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে ওঠে বিভীষিকাময়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে ঘটে নৃশংসতম হত্যার সব থেকে বড় ঘটনাটি। হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।

ভোরবেলা যখন ঢাকা শহরে সাংবাদিকরা বের হন তখন গোটা শহরে প্রায় কয়েকলাখ লাশ পড়েছিল। শুধু হাহাকার আর কান্না। আজও সেই স্মৃতি বাঙালিদের মনে বেঁচে আছে। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.