পাকিস্তানের কালাশ মেয়েদের জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে, শেষ ৫০ বছরে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে ২৩০০০ কালাশকে



Odd বাংলা ডেস্ক: বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী নাকি এই কালাশরা। তুষারাবৃত হিন্দুকুশের ঘন সবুজ গালিচা মোড়া উপত্যকা দিয়ে পাহাড়ি ঝর্না ছুটে চলেছে আপন খেয়ালে। প্রাচীন ওয়াল নাট, অ্যাপ্রিকট, ওক,পাইন,ফার,উইলো গাছের ভিতর দিয়ে উপত্যকায় নেমে আসে শৃঙ্গ ছোঁয়া মেঘের দল। চারদিকে রঙবেরঙের পাহাড়ি ফুলের শোভা। এমনই এক স্বপ্নের পরিবেশে বাস করে এক স্বাধীনচেতা প্রাচীন শেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী।



কালাশদেরকে আদিবাসী জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে তাদের পূর্বপুরুষগণ মধ্য এশিয়া থেকে চিত্রালে অভিপ্রায়ণ করেছিল।১৮ শতক থেকে কালাশরা চিত্রালের মেহতারদের দ্বারা শাসিত হয়ে এসেছে। 



চিত্রালের প্রধান নৃগোষ্ঠী খো-দের সাথে এদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, যেখানে খো জনগোষ্ঠী হচ্ছে সুন্নি ও ইসমাইলি মুসলিম। এদের অঞ্চলের পশ্চিমে সীমান্তের পর আফগানিস্তানের নুরিস্তানিদের বাস, সেই প্রদেশটির নাম নুরিস্তান প্রদেশ যা পূর্বে কাফিরিস্তান নামে পরিচিত ছিল। ১৮৯০ এর দশকে আফগানিস্তানের আমির আব্দুর-রহমান নুরিস্তানিদেরকে হত্যা ও যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে জোড়পূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করেন এবং অঞ্চলটির নাম পরিবর্তন করে নুরিস্তান রাখেন।



এই ঘটনার পূর্বে, কাফিরিস্তানের অধিবাসীগণ চিত্রালের মেহতারের কাছে রাজস্ব দান করত এবং তার অধিরাজ্য স্বীকার করত। কিন্তু ডুরান্ড চুক্তির পর এই অবস্থার সমাপ্তি ঘটে এবং এর ফলে কাফিরিস্তান আফগান প্রভাবাধীনে চলে যায়। এই কাফিরিস্তানের অর্থ কাফিরদের বাস যেখানে। মানে যাঁরা অমুসলিম। কিন্তু এই এলাকা যখন পাকিস্তানের অংশ হিসেবে মর্যাদা পেল তখন কালাশরা আশা করেছিল তারা ভালো একটা জীবন পাবে। কিন্তু পাকিস্তানিদের হাতে পড়ে আরও এক সমস্যা শুরু হয়েছে কালাশদের।

গুল, এই মেয়েটিকে তার মুসলিম স্বামী জোর করে ইসলাম গ্রহণ করিয়েছে, Image Source: DW


 ১৯৫০ সালে কালাশদের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৩০,০০০ সেখানে বর্তমানে তাদের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০০। হিসেব বলছে প্রতি বছর অন্তত ২০০ কালাশকে ধর্মান্তরিত করছে স্থানীয় মুসলিম পুরুষরা। কালাশদের আরও অভিযোগ তাদের মধ্যে দুটি বিবাহ অনৈতিক। কিন্তু মুসলিমরা বাড়িতে স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তাদের বিবাহ করছে। তারপর কালাশ মেয়েরা গর্ভবতী হয়ে পড়লে তাদের ধর্মান্তরিত করার জন্য চাপ দিচ্ছে এই মুসলিম পুরুষরা। অন্যদিকে কালাশরা সেখানে সংখ্যালঘু হওয়ায় কোনও প্রতিবাদও করতে পারছে না। 


তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট
Blogger দ্বারা পরিচালিত.