প্রতি রাতে আলাদা সঙ্গীর সঙ্গে শয্যায় যাচ্ছেন? বিজ্ঞান কী বলছে জানুন


Odd বাংলা ডেস্ক: পলিঅ্যামরি অথবা পলিগ্যামি নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে বহু আলোচনা-পর্যালোচনা হয়ে চলেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরনের প্র্যাকটিসকে ‘খারাপ’ বলা হয় কারণ আধুনিক সভ্যতায় মোনোগ্যামি অথবা একজন পার্টনারের সঙ্গে জীবনযাপনই সর্বজনগ্রাহ্য। কিন্তু এই নৈতিকতা এবং অবশ্যই বিয়ে বা কমন ল পার্টনারের আইনি ঘেরাটোপ উপেক্ষা করেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই প্র্যাকটিস চলে আসছে।

সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষয়গুলি নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা একটু বেশি হয় বলে অনেকের মনে হতে পারে যে এটা আধুনিক জীবনযাপনের ফলাফল কিন্তু আদতে ঠিক উল্টোটাই। আদিম মানুষ ছিল পলিগ্যামাস, সেখানে স্বামী-স্ত্রী বা দম্পতির কোনও ধারণাই ছিল না। অনেক রাজনৈতিক-সমাজনৈতিক বিবর্তনের পরে এক-নারী বা এক-পুরুষ গমনের সামাজিক অভ্যাসটি তৈরি হয়েছে। তাও এখনও সব দেশে তা নয়, এমন বেশ কিছু দেশ রয়েছে যেখানে বহুনারীগমন সমাজ ও আইন-স্বীকৃত।

তাই আধুনিক সময়ে যদি কেউ এই তত্ত্বকে নাকচ করে, একই সঙ্গে একাধিক পার্টনারের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হন, তবে এটা বলা ভুল হবে যে যুগের হাওয়া লেগে তিনি আসলে বখে গিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল একই সঙ্গে একাধিক মানুষের সঙ্গে যৌনতা মানুষের মনে কি কোনও খারাপ প্রভাব ফেলে?

আসলে ভাল বা খারাপ বিষয়টা আপেক্ষিক। যদি যৌনতার নেশাগ্রস্ততায় কোনও মানুষ নতুন নতুন শরীর পেতে এই কাজ করেন, তবে তা কোনওভাবেই তাঁর শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়। কিন্তু যদি কেউ পলিঅ্যামরি থেকে অর্থাৎ একই সঙ্গে একাধিক সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি ভালবাসা থেকে শারীরিক সম্পর্কে যান, তবে তার ভাল এবং খারাপ দু’টি দিকই থাকে। যাকে আমরা এই সময়ে ওপেন রিলেশনশিপ বলি, সেই ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একাধিক জনের সঙ্গে শারীরিক মিলন একেবারেই ওপেন সিক্রেট।

অর্থাৎ একজন জানেন, অন্যজন তাঁকে ছাড়াও একাধিক মানুষের সঙ্গে শারীরিক-মানসিক সম্পর্কে যুক্ত। ব্রিটিশ মনস্তত্ত্ববিদ নীল বার্টন সাইকোলজি টুডে-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে লিখছেন, ‘‘বেশিরভাগ মানুষই পজেসিভ এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিদ্বেষী। নতুন কোনও সম্পর্ক তৈরি হওয়া মানেই, ইতিমধ্যেই যে পার্টনার রয়েছে, তার উপর চাপ সৃষ্টি করা। যদি এমন হয় যে দম্পতির মধ্যে একজন পলিঅ্যামরাস আর একজন নয়, তবে সেই দ্বিতীয়জন শুধুই তার পার্টনারের এই স্বভাবকে মানিয়ে নেবে কিন্তু মনে নেবে না।’’

এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে কোনও দম্পতি থাকলে তা কিছুদিন পরে সম্পর্কের স্বাস্থ্যহানি ঘটায়। যিনি শুধুই মানিয়ে নিচ্ছেন, তাঁর মনের উপর যেমন চাপ পড়ে, তেমনই যিনি একাধিক শয্যাসঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছেন, তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যও বিঘ্নিত হয় প্রতিনিয়ত টানাপোড়েনের জন্য। পুরোটাই নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং তাঁর পার্টনারের পরিণতমনস্কতার উপর। এক কথায় তাই ভাল বা খারাপ বলে দেওয়া যায় না।

তবে এই ধরনের সম্পর্ক যে জীবনে অনেক ধরনের জটিলতা তৈরি করে, সেই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কখনও ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়, কখনও অপরাধবোধ আবার কখনও বেপরোয়া মনোভাব মানসিক স্থিতিশীলতার বিঘ্ন ঘটাতে বাধ্য।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.