আমফানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ সুন্দরবনের ১৭,৮০০ হেক্টর কৃষিজমি, UNESCO-র ঐতিহ্যবাহী স্থান এখন ধ্বংসপুরী
Odd বাংলা ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরের নিম্ন-দ্বীপাঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবন, যা ভারত এবং বাংলাদেশের জুড়ে বিস্তৃত। এই সুন্দরবন কিন্তু তার অনন্য ম্যানগ্রোভ অরণ্যের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এরাজ্যে আছড়ে পড়ার পর থেকে সুন্দরবনের চেনা-পরিচিত রূপ ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে।
আমফানের ধ্বংসলীলায় অসংখ্য গাছ পড়ে গিয়েছে, সুজলা সুফলা জমি আজ বন্ধ্যা, নষ্ট হয়েছে জমির ফসল। ঝড়ের দাপটে সমুদ্রের লবণ জল চাষের জমিতে ঢুকে পড়ার ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ঘূর্ণিঝড়ের বিধ্বংসী প্রভাবে বন্যপ্রাণও যথেষ্টভাবে প্রভাবিত হয়েছে। প্রসঙ্গত, সুন্দরবন তার বিরল এবং বিপন্ন প্রজাতির জন্য UNESCO-র ঐতিহ্যপূর্ণ জায়গাগুলির মধ্যে স্থান পেয়েছে।
অনেকেই হয়তো জানেন না যে, সুন্দরবন বন সংরক্ষণাগারটি ৯৬টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের বিচরভূমি। কিন্তু আমফানের জেরে তাদের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। সুন্দরবলেন এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, 'সুন্দরবন শেষ হয়ে গিয়েছে। আমফান একে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের সমস্ত ফসল এমনকি গাছও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আমরা এবার কী করব?'
আমফান মানুষের জীবিকা নির্বাহের সমস্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছে। মাথার ছাদটুকু রেখে যাওয়ার মতোও কৃপা করেনি। ভেঙেছে বাড়ির দেওয়াল, বিদ্যুতের পোস্টগুলিো স্থানচ্যুত হয়ে দুমড়ে-মুছড়ে গিয়েছে। বন্ধ মোবাইল নেটওয়ার্ক। বহির্বিশ্বের থেকে কার্যত যোগাযোগচ্যুত হয়েছেন সুন্দরবলবাসী।
এমনকি ডেল্টা অঞ্চলের কৃষিজমিগুলিও এখন কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছে, ঝড়ের সঙ্গে বিপুল পরিমাণে সমুদ্রের নোনা জলের সঞ্চার হওয়ায় এমন বিপত্তির মুখোমুখি অসংখ্য মানুষের রুটিরুজি। কারণ, আগামী কয়েক বছর ধরে, কৃষক ওইসব জমিতে কোনওরকম ফলস ফলাতে পারবেন না। যার ফলে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন প্রায় ২ লক্ষেরও বেশি কৃষক
সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্ত্রী মন্টুরাম পাখীরা একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, সমুদ্র থেকে লবণাক্ত জল প্রবেশ করার কারণে প্রায় ১৭,৮০০ হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাঁদের অনুমান, ১,০৮,০০০ কৃষক ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এটি সুন্দরবনের ইতিহাসে একটি কালো দিন হতে চলেছে। এখনও সুন্দরবনে উদ্ধারকার্য অব্যাহত। চলছে ত্রাণের কাজও।
Post a Comment