যম-জামাই-ভাগনা, তিন নয় আপনা, তাহলে আবার জামাইয়ের জন্য ষষ্ঠী কেন?
Odd বাংলা ডেস্ক: কথাতেই আছে ‘যম-জামাই-ভাগনা- কেউ নয় আপনা। বাঙালি সমাজে এটাই প্রচলিত প্রবাদ।
কিন্তু, নতুন পাখার উপর আমের পল্লব এবং আম ও তৎসহযোগে পাঁচ ধরনের ফল সাজিয়ে জামাই-এর মনঙ্গল কামনায় শাশুড়ির দল ‘জামাই ষষ্ঠী!-র দিনে যে ব্রত রক্ষায় ব্রতী হন তার সারমর্মটা কী?
এখানেই শেষ নয়, ১০৮টি দুর্বাবাঁধা আঁটি দিয়ে পুজোর উপকরণ সাজাতে হয়। করমচা-সহ পাঁচ থেকে সাত বা নয় রকমের ফল কেটে কাঁঠাল পাতার উপর সাজিয়ে রাখতে হয় শাশুড়িকে। যে জামাই কখনও আপন হয় না বলে প্রবাদ, তাহলে তার জন্য এত ঘটার আয়োজন আর আদিখ্যেতার বহর! পুজোর শেষে জামাইকে পাখা হাওয়া আর শান্তি জলের ছিটা দেওয়া! এমনকী, মা ষষ্ঠীর আশির্বাদ বলে জামাইয়ের হাতে হলুদ মাখানো সুতো পরিয়ে দেওয়া! এ সবই বা কেন?
আছে সবকিছুরই পিছনে গভীর স্বার্থ। আর এই স্বার্থটা হল জামাইকে তোষামেদ। কারণ, এতে মেয়ে ভাল থাকবে। যম মানুষের মৃত্যু দূত। ভাগনা অন্যের বাড়ির ছেলে। কিন্তু, জামাই অন্যের বাড়ি হলেও মেয়ের সম সঙ্গে সাংসরিক বন্ধনে থাকায় শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ। তাই যম, ভাগনা ছেড়ে জামাইকে আপ্যায়ণের মানে মেয়েকে ভাল রাখা। তাই হাজারো লোকাচার। হাজারো বিধি পালনের হিড়িক।
জামাই-এর মঙ্গলার্থে ধান-এর ব্যবহার। কারণ, ধান সমৃদ্ধির ও বহু সন্তানের প্রতীক। দুর্বা ব্যবহৃত হয় চুর সবুজ ও চির সতেজের প্রতীক হিসাবে। এর মানে জামাই-এর দীর্ঘায়ু কামনা। এখানেই শেষ নয় জামাই-কে আশীর্বাদ করে ষাট-ষাট বলাটাও শাশুড়িদের নিয়মের মধ্যে পড়ে। মনে রাখবেন এর সমস্তটাই হচ্ছে শুধু জামাই-এর জন্য। আসলে মেয়ের জন্য মঙ্গলচিন্তা এবং তাঁর সংসার অঁটুট রাখার প্রার্থনাতেই এত আয়োজন হয়। কোথাও কোথাও আবার জামাইকে শ্যালিকারা বাঁশের কঞ্চি বেঁকিয়ে ‘হার্ট শেপ’ তৈরি করে তাতে লাল সুতো দিয়ে ধান বেঁধে ভগ্নিপতিতে জামাই ষষ্ঠীর উপহার দেয়।
ঢাকা বা চট্টগ্রামে আবার বিয়ে পাকা হলে মেয়ে ও ছেলের বাড়ি একে অপরকে জৈষ্ঠমাসে আম-দুধ খাওয়ানোর প্রথা আছে।
আসল কথা মেয়ে যাতে সুখে শান্তিুতে দাম্পত্য জীবন কাটাতে পারে তাই জৈষ্ঠ মাসে নতুন জামাইকে আদর করে বাড়িতে এনে আম-দুধ খাইয়ে আশীর্বাদ হিসাবে উপহার দেওয়া।
Post a Comment