সন্তানের মঙ্গলকামনায় হয় ষষ্ঠীপুজো, কিন্তু জামাইবাবু এবং মা ষষ্ঠীর যুগলবন্দী হল কীভাবে?


Odd বাংলা ডেস্ক: জামাইকে কেন্দ্র করে ষষ্ঠী উৎসব পালন করা হয় প্রধানত পশ্চিমবঙ্গে| বাড়ির মেয়ের বিয়ের পর একটি পরিবারের সঙ্গে আর একটি পরিবারের মেলবন্ধনকে আরও দৃঢ় করতেই জামাইষষ্ঠী আয়োজন| আমাদের দেশে সেই প্রাচীনকাল থেকেই বহুদেবত্ববাদের পূজারি হিন্দু মুনিঋষিরা বিভিন্ন দেবদেবীর পাশাপাশি কিছু উপদেবতারও পুজো করতেন| 'ষষ্ঠী' বা 'মা ষষ্ঠী' সেইরকমই এক উপদেবতা| সম্ভবত শিশুমৃত্যু ও প্রসূতি মৃত্যুর হার অত্যধিক বেশি হওয়ায়, শিশুর জন্ম ও স্বাস্থ্যরক্ষা এবং প্রসূতির জীবনরক্ষার ভার অর্পন করা হয়  মা ষষ্ঠীর কাছে| তাই সন্তানের মঙ্গল কামনায় মায়েরা ষষ্ঠীর পুজো করে থাকেন| 

এখন প্রশ্ন হল মা ষষ্ঠীর সঙ্গে জামাই-এর সম্পর্ক কী ?
ভারতবর্ষ তথা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে একসময় সংস্কার ছিল মেয়ে যতদিন না পুত্রবতী হয় ততদিন মেয়ের বাবা বা মা মেয়ের বাড়িতে পা রাখতে পারবেন না| যার ফলে সন্তানধারণে সমস্যা বা সন্তান মৃত্যুর জেরে মেয়ের বাবা-মা-কে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হত মেয়ের বাড়ি যাওয়ার জন্য| কিন্তু তা হলে মেয়ের মুখও দেখতে পাবেন না বাবা-মা? সেইজন্যই সমাজের বিধানদাতারা পরামর্শ দিলেন জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠীকে জামাই ষষ্ঠী হিসাবে পালন করার| যেখানে মেয়ে জামাইকে নেমন্তন্ন করে সমাদর করা হবে ও মেয়ের মুখদর্শন করা যাবে আর সেইসঙ্গে মা ষষ্ঠীর পুজো করে তাঁকে খুশি করা যাতে মেয়ে শীঘ্রই সন্তানসম্ভবা হতে পারে। 

পরে থেকে মেয়ের বাবা-মা অথবা যে ব্যক্তি কন্যা সম্প্রদান করবেন তিনি এক বছর মেয়ের বাড়ি যাবেন না বা গেলেও মেয়ের বাড়ির খাবার গ্রহণ করবেন না| যদিও আধুনিক শহুরে জীবনে এই সংস্কার খুব একটা মানা হয় না| সংস্কার যাই হোক না কেন, মেয়ে জামাইকে ডেকে এনে সমাদর করা ও সেইসঙ্গে কন্যা যাতে সন্তানবতী হয় সেই লক্ষ্যে 'মা ষষ্ঠীকে' জুড়ে দিয়ে উৎসবের নামকরণ হল জামাইষষ্ঠী।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.