সূর্যগ্রহণ নিয়ে যে যে কুসংস্কার বা ভ্রান্ত ধারণা বাস করছে মানুষের মনে
Odd বাংলা ডেস্ক: সূর্যগ্রহণের কথা বললেই বাড়ির বয়স্ক মানুষরা বলেন ওই সময়টা নাকি অশুভ। ওই সময় খাবার খেতে নেই। গ্রহণ শেষ হলে তবেই স্নান করা যায়। এই সময়ে গর্ভবতী মহিলাদেরও সাবধানে থাকার পরামর্শও দিয়ে থাকেন অনেকে। সূর্যগ্রহণ নিয়ে মানুষের মধ্যে এমনই অনেক রকমের ভ্রান্ত ধারণা এবং কুসংস্কার রয়েছে, সেরকমই কিছু কুসংস্কার নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করব।
১) আজটেক সভ্যতায় মনে করা হত, গ্রহণের অর্থ হল এইসময় সূর্য বা চাঁদকে একটু একটু করে খেয়ে নেওয়া হয়। এর থেকেই মেক্সিকোর বাসিন্দারা মনে করতে শুরু করেন, যদি কোনও গর্ভবতী মহিলা গ্রহণ দেখেন, তখন তাঁর গর্ভের সন্তানের মুখও একটু একটু করে খেয়ে নেয় অশুভ শক্তি।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, রাহু গ্রাস করে সূর্য বা চন্দ্রকে। তাই এই সময় গর্ভবতী মহিলাদের ঘরের বাইরে বেরনো বারণ। তাতে সন্তানের মুখ বিকৃত হতে পারে, থেকে যেতে পারে জন্ম চিহ্নও। তবে এর কোনও বাস্তব সম্মত ব্যাখ্যা মেলে না। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুসারে, সূর্যগ্রহণ দেখতে গিয়ে সূর্যের দিকে খালি চোখে তাকালে তাতে চোখ খারাপ এমনকী, অন্ধত্ব নেমে আসতে পারে।তা শুধু গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রেই নয়, যে কারওর ক্ষেত্রেই এটি হতে পারে। আলাদা করে কেবল গর্ভবতী মহিলাদের শারীরিক কোনও ক্ষতি হয়-এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
২) গ্রহণের সময়ে রান্না করে রাখা খাবার খেতে নিষেধ করা হয়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, সূর্যগ্রহণের সময় অনেক জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে আমাদের পরিবেশে। তার ফলে রান্না করে রাখা খাবার বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। এই সময় না খাওয়ারও নিদান থাকে। তবে এর কোনও জোরালো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
৩) গ্রহণের সময় শাড়িতে পিন বা সেফটিপিন লাগানো বা কোনও গয়না পরতে বারণ করা হয়। বলা হয় ছুরি বা বঁটি দিয়ে ফল-সবজি কাটাও নিষেধ। এতে নাকি বিপদ হতে পারে। বলে রাখি এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি।
৪) গ্রহণের সময় গর্ভবতী মহিলাদের বিছানার উপর চিত হয়ে শুয়ে থাকারও পরামর্শ দেন অনেকে। কিন্তু গাইনোকলজিস্টরা বলেন, গ্রহণের সময়ে এমন পরামর্শে কান দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
৫) অন্যদিকে মেক্সিকোর মানুষের মধ্যে ধারণা করা হয় গ্রহণের সময় গর্ভবতী মহিলারা পেটের কাছে ছুরি ধরে বসে থাকতে পারেন বা লাল অন্তর্বাস পরতে পারেন। এতে নাকি গ্রহণের কু-প্রভাব পড়ে না। রক্ষা পায় গর্ভের সন্তান। যদিও এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি।
Post a Comment