করোনাভাইরাসের একশো বছর আগেও মানুষকে ঠিক এভাবেই মাস্ক পরে থাকতে হত



Odd বাংলা ডেস্ক: নভেল করোনাভাইরাস এবং ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু'র মধ্যে খুব বেশি সাদৃশ্য খোঁজা হয়তো ক্ষতিকর হতে পারে, কিন্তু সে সময় বিভিন্ন দেশের সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল, তার সাথে বর্তমানে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর নানারকম মিল রয়েছে। স্প্যানিশ ফ্লু'তে সারা বিশ্বে অন্তত পাঁচ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল। করোনাভাইরাসে বয়স্কদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকলেও স্প্যানিশ ফ্লু'তে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল।


করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা ঠিক করতে স্প্যানিশ ফ্লু সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা করে ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড। গবেষণায় মূল যে বিষয়টি উঠে আসে, তা হলো ১৯১৮ সালের শরৎকালে রোগটি দ্বিতীয় ধাপে ছড়িয়ে পড়লে, তা প্রথম দফার চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করেছিল।


কাশি এবং হাঁচির মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়ে সতর্কতা জানানো হয়েছিল প্রজ্ঞাপণ ও প্রচারপত্রের মাধ্যমে। ১৯১৮ সালের নভেম্বরে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড পত্রিকা পাঠকদের পরামর্শ দেয়: "প্রতিদিন রাতে ও সকালে নাকের ভেতরে সাবান ও জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন; সকালে ও রাতে জোর করে হাঁচি দিন, এরপর লম্বা নিঃশ্বাস নিন। মাফলার পরবেন না, প্রতিদিন দ্রুতবেগে হাঁটুন এবং কাজ থেকে হেঁটে ঘরে ফিরুন।" ১৯১৮ সালের মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি, এমন কোনো দেশ নেই। তবে মহামারির প্রাদুর্ভাব ও তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় বিভিন্ন দেশের সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের মধ্যে বিস্তর ফারাক ছিল।



যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো রাজ্য তাদের নাগরিকদের কোয়ারেন্টিন করার নির্দেশ দেয়। কোনো কোনো রাজ্য মুখে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করে। পুরো দেশেই সিনেমা হল, থিয়েটার এবং মনোরঞ্জনের স্থান বন্ধ করে দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য যে কোনো এলাকার তুলনায় নিউইয়র্কের প্রস্তুতি বেশি ছিল। আগের ২০ বছর তারা যক্ষার বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চালিয়ে আসছিল, যে অভিজ্ঞতা তারা মহামারি পরিস্থিতিতে কাজে লাগায়। ফলস্বরূপ, নিউইয়র্কে মৃত্যুর হার ছিল সবচেয়ে কম।


মহামারি শেষ হতে হতে যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখ ২৮ হাজারে। জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের মধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। মহামারি শেষ হওয়ার পর আরো কয়েক বছর চলে ভাইরাস ধ্বংসের প্রয়াস।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.