পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ মার্কিন তরুণীর
Odd বাংলা ডেস্ক: সাবেক পাকিস্তানি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন মার্কিন সংবাদিক ও ব্লগার সিন্থিয়া ডি রিচি। তার অভিযোগ, ইসলামাবাদে প্রেসিডেন্ট হাউসে তাকে ধর্ষণ করেন সে দেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক। প্রাক্তন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি তার গায়ে হাত তোলেন বলেও অভিযোগ করেছেন সিন্থিয়া। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইমরান খান সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সিন্থিয়া, বরাবরই পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে এসেছেন। শুক্রবার (০৫ জুন) ফেসবুক লাইভে তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে পাকিস্তানের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক আমাকে ধর্ষণ করেন।
এর পর আরো একটি ফেসবুক পোস্টে সিন্থিয়া জানান, ২০১১ সালে ভিসা নিয়ে কথা বলতে রেহমান মালিকের সঙ্গে তার বাসভবনে দেখা করেন তিনি। সেখানে ঘুমের ওষুধ মেশানো পানীয় খাইয়ে রেহমান মালিক তাকে ধর্ষণ করেন। সেই সময় পাকিস্তানে পিপিপি-র সরকার ছিল। সেখানে তাকে কেউ সাহায্য করবে না ভেবেই সেই সময় এ নিয়ে তিনি মুখ খোলেননি বলে জানিয়েছেন সিন্থিয়া।
ইসলামাবাদে প্রেসিডেন্ট হাউসে থাকাকালীন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি এবং প্রাক্তন মন্ত্রী মখদুম সাহাবুদ্দিন তার গায়ে হাত তোলেন বলেও দাবি করেছেন সিন্থিয়া। সেই সময় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন আসিফ আলি জারদারি। তার স্ত্রী তথা পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও এর আগে একাধিক মন্তব্য করেছিলেন সিন্থিয়া। প্রকাশ্যে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় জারদারি পরিবার ও পিপিপি তাকে হুমকি দিচ্ছে, তার পরিবারকে হেনস্থা করছে বলেও দাবি করেন সিন্থিয়া। কিন্তু এক পাকিস্তানি নাগরিকের সঙ্গে সম্প্রতি বাগদান সম্পন্ন হয়েছে তার, হবু স্বামীই তাকে সত্যিটা সামনে তুলে আনতে উৎসাহ জুগিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু তার বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করেছেন রেহমান মালিক। শনিবার তার মুখপাত্র একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেন, এ নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চান না রেহমান মালিক। কিন্তু সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করছেন তিনি। এই সমস্ত অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। রেহমান মালিকের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। এক জন বিশেষ ব্যক্তি ও সংগঠনের নির্দেশ মতো কাজ করছেন ওই মার্কিন নারী।
সিন্থিয়ার গায়ে হাত তোলার কথা অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিও।
২০০৯ সালে পর্যটক হিসাবে প্রথম বার পাকিস্তানে পা রাখেন সিন্থিয়া ডি রিচি। অল্পদিনের মধ্যেই সেখানকার রাজনৈতিক মহলে ওঠাবসা শুরু হয়ে যায় তার। সিন্থিয়ার দাবি, আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি যাতে সঠিক ভাবে তুলে ধরা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি এবং তার সরকারের মন্ত্রী রেহমান মালিক। পিপিপি-র জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি।
এই মুহূর্তে ইসলামাবাদেই রয়েছেন সিন্থিয়া। সেখানে চিত্রনির্মাতা হিসাবে কাজ করেন তিনি। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও করেন। তবে একসময় পিপিপি-র অন্দরে ওঠাবসা থাকলেও, এই মুহূর্তে ইমরান খান সরকারের সঙ্গে দহরম মহরম রয়েছে তার।
Post a Comment