চুম্বন নিয়ে অজানা কিছু তথ্য



Odd বাংলা ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে দুই রকমের মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়। এক সম্প্রদায়ের মানুষ হলেন যারা চুমু খেয়েছেন এবং অন্য সম্প্রদায় যারা চুমু খাননি। চুমু নিয়ে নানা অজানা তথ্য লুকিয়ে আছে ইতিহাসে। সেই খোঁজ-ই হাজির করলাম আমরা।

চুমুর রসায়ন –
অনেকের হয়তো জানেন বিষয়টা, তবে বিজ্ঞানও এবার এটা নিয়ে পুনর্বিবেচনা এবং কাটাছেঁড়া শুরু করে দিয়েছে। একটা সুস্থ সম্পর্কের জন্য চুমু খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেখা গিয়েছে, একটা ভাল চুমু থেকে ডোপামাইন বেরোয় যা উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। এটা আমাদের ঘুম এবং হজম ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে।

স্বাস্থ্যের উপযোগী –
যদি চুমু আর সংক্রমণ শব্দে মনে অযথা আতঙ্ক তৈরি হয়, তা হলে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। বিজ্ঞানিরা বলেন, আমাদের সবারই এই ধরনের সংক্রমণ আছে। যদিও ২০ শতাংশ সংক্রমণ মানুষে মানুষে আলাদা হয়ে থাকে। তাই চুমু খেলে ২০ শতাংশ অজানা সংক্রমণ আমাদের মধ্যে ঢোকে যা আসলে আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতাকেই বাড়ায়। শুধু তাই নয়, চুমু দাঁত পরিষ্কার করে এবং রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই পড়াশোনা বন্ধ করুন আর চুমু খান।

প্রথম চুমু –
টাইমমেশিনে চড়ে ১৫০০ বিসি-র ভারতে ফিরে যেতে হবে প্রথম চুমুর খোঁজ করতে। বিভিন্ন স্থাপত্যে সংস্কৃত ভাষায় খোদাই করে রাখা ইতিহাসের প্রথম লিপ-লক সম্পর্কে। যেখানে একটি স্থাপত্যে স্মুচকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে ‘ড্রিঙ্কিং মোয়েসচার অব দ্য লিপস’ বলে। বিশ্বখ্যাত কামাসুত্রায় তিরিশেরও বেশি রকমের চুমুর কথা বলা আছে।

আদি-হলিউড চুমু –
নটোরিয়াস ছবিতে ইনগ্রিড বার্গম্য়ান আর ক্যারি গ্রান্টের চুমুর কথা মনে আছে? এটা সম্ভবপর হত না যদি না আলফ্রেড হিচকক ছবির নির্দেশক হতেন! সেই সময় এক নির্দেশিকা অনুযায়ী তিন সেকেন্ডের বেশি অন-স্ক্রিন চুমুতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু হিচকক খুব চালাকি করে চুমুর দৃশ্য বানিয়েছিলেন। ডায়লগ এবং নড়াচড়ার আড়ালে। ১৯৪৬ সালের এই ছবিকে এখন পর্যন্ত অন্যতম সেরা রোম্যান্টিক ছবির একটা বলা হয়।

চুমু ও সংক্রমণ –
এক গবেষনায় বলা হয়েছে, দশ সেকেন্ডের বেশি ফ্রেঞ্চ চুমু ৮০ মিলিয়ন সংক্রমককে একে অপরের মুখে ঢুকিয়ে দিতো পারে।

চুমু ভালবাসেন? অস্কুলোলজিস্ট হতে পারেন! –
চুমুকে কেরিয়ার বানাতে পারেন! না, সিনেমায় নামার কথা বলছি না। চুমু নিয়ে পড়াশোনাকে বলে ফিলেম্য়াটোলজি। আর সেটাই যদি সেরা হতে পারেন, তা হলে চুমু বিজ্ঞানী কিংবা অস্কুলোলজিস্টও হতে পারেন।

চুমু উৎসব –
বালির ডেনপাসার গ্রামে ওমেদ ওমেদান বলে একটা উৎসব হয় প্রতি বছর। এখানে তরুণ-তরুণীরা একে ওপরকে চুমু খান। মনে করা হয়, এই চুমু তাঁদের জীবনে নাকি ভাগ্য-প্রতিপত্তি বাড়ায়।

প্রথম অন-স্ক্রিন চুমু –
১৮৯৬ সালে ‘দ্য কিস’ ছবিতে প্রথম অন-স্ক্রিন চুমুর দৃশ্য দেখানো হয়। মখ্য চরিত্রে ছিলেন কাডানিয়ান অভিনেতা মে ইরউইন ও জন সি রাইস।

লম্বা চুমুর রেকর্ড –
২০১৩ সালে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে এক থাই যুগল লম্বা চুমুর রেকর্ড গড়েন। ৫৮ ঘণ্টা, ৩৫ মিনিট ও ৫৮ সেকেন্ডের। এক্কাচাই ও লাকসনা তিরানারাট স্বামী-স্ত্রী ‘রিপ্লেজ বিলিভ ইট ওর নট’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন।

১৫ চুমুর রহস্য –
সাম্প্রতিককালের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সঠিক পার্টনার নির্বাচন করতে একজন ব্রিটিশ মহিলা গড়ে ১৫ জন ছেলেকে চুমু খায়। ব্রিটিশ ছেলের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১৬।

চুমুর শব্দের উৎস –
কখনও ভেবেছেন কোথায় চুমু শব্দের উৎস? বিশেষজ্ঞরা বলেন, চুমুর উৎস পুরনো ইংরেজি শব্দ ‘কাইসন’ থেকে। চুমুর সময় যে শব্দ হয়, সেটার সঙ্গে জড়িত।

ভাগ্যের চুমু –
আয়ারল্যান্ডের ব্লার্নে স্টোন ১৫ সেঞ্চুরির এমন একটা ট্যুরিস্ট স্পট, যেখানে হাজার হাজার লোক সেই পাথরে চুমু খেতে যায়। তালিকায় অন্যতম নাম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইন্ডস্টন চার্চিল।

রোমান চুমু –
‘ইউ মে কিস দ্য ব্রাইড ‘। আমরা সবাই এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করি বা সেই মুহূর্তের স্মৃতি চিরজীবন সাজিয়ে রাখি হৃদয়ে। কিন্তু কেউ কি জানে, এই ব্যাপারটা প্রথম চালু করে রোমানরা। ব্যবসার কোনও চুক্তি হলে চুমু খেয়ে সেটায় শিলমোহর লাগাতো। পরে ব্যবসার চুক্তি থেকে সেটা বিয়ের আসরে নিয়ে যাওয়া হয়।

চুমু নয়, প্লিজ! –
সোমালিয়া থেকে ভারতের অনেক এমন জায়গা আছে যোখানে চুমুর প্রচোলন নেই। এমনকী সাউথ প্যাসিফিকের মাঙ্গাইয়া দ্বীপের বাসিন্দাদের চুমু সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না। ব্রিটিশরা এসে সেটা চালু করে। সুদান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বলিভিয়ার কিছু অঞ্চলে এখনও নিষিদ্ধ চুমু।

চুমু ও শারীরিক কসরত –
যেটা আগেই বলেছি, চুমু শুধু শিল্প নয়, বিজ্ঞানও। একটা নিখুঁত স্মুচে ৩৪ ফ্যাসিয়াল এবং ১১২ রকমের পস্টচুয়াল পেশির ব্যবহার হয়। আর চুমুর পেশিকে আমি আর্বিকুলারিস অরিস বলি।

ডান দিকে ঝুঁকে –
আমরা কখনও লক্ষ্য করেছি কিনা জানি না, তবে চুমু খাওয়ার সময় আমাদের মাথা বেশির ভাগ সময়ই ডান দিকে ঝুঁকে যায়। আসলে মাতৃগর্ভেই এই প্রবণতা তৈরি হয়ে যায়।বেশির ভাগ মানুষই ডান দিকে ঝঁকে কাজ করি।

আয়ু বৃদ্ধির রহস্য –
১৯৮০ সালে এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সকল স্বামী তাঁদের স্ত্রীকে হামেশাই চুমু খান, বিশেষ করে কাজে বেরোনোর সময়, তাঁদের আয়ু অবিবাহিত পুরুষদের তুলনায় পাঁচ বছর বেশি হয়। বিবাহিত পুরুষরা তুলনায় অনেক বেশি চিন্তামুক্ত থাকেন, দুর্ঘটনাও কম ঘটে তাঁদের। জীবনের আর এক নাম স্ত্রী, তাই তো!

চুমু ও মৃত্যু –
১৫৬৫ সালে ইতালির ন্যাপেলসে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এমনকী নিয়ম ভাঙার সাজা মৃত্যূদন্ড। এখনও পর্যন্ত ন্যাপেলস সেই কালো ছায়ার কবল থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। যেমন দক্ষিণ ন্যাপেলসের একটি শহর এবোলি। যেখানে চলন্ত গাড়িতে চুমু নিষিদ্ধ। কোনও অপরাধী ধরা পড়লে তাঁর ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৮ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হয়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.