শুধু ঠান্ডাজনিত সমস্যাকে দূরে রাখাই নয়, চ্যবনপ্রাশে রয়েছে আরও অনেক অজানা গুণাগুণ


Odd বাংলা ডেস্ক: শীতকালে সর্দিকাশির সমস্যার পাশাপাশি আজকের দিনে ঋতুপরিবর্তনের কারণে সারা বছরই সর্দি-কাশি-গলা ব্যথার মতো নানা সমস্যা লেগেই থাকে। তাই ঋতু নির্বিশেষে সর্দি-কাশিকে কাবু করতে প্রতিদিন সকালে খান এক চামচ  চ্যবনপ্রাশ। চ্যবনপ্রাশ এমনই এক পুষ্টিকর আয়ুর্বেদিক জ্যাম, যা আপনাকে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকদুণ বাড়িয়ে তোলে। বলা হয় চ্যবন প্রথম এই ফর্মুলা আবিষ্কার করেছিলেন বলেই এর নাম চ্যবনপ্রাশ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল চ্যবনপ্রাশ-এর কথা খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে চরক সংহিতাতেও উল্লেখ রয়েছে।

চ্যবনপ্রাশ এর ফর্মুলা- চ্যবনপ্রাশ তৈরি করতে অশ্বগন্ধা, কেশর, নিম, আমলকি, পিপুল, তুলসী, ব্রাহ্মী, এলাচ, সাদা চন্দন, অর্জুন, ঘি, মধু ইত্যাদি উপাদান ব্যবহার করা হয়। আট থেকে আশি সব বয়সের মানুষই নিশ্চিন্তে এই চ্যবনপ্রাশ খেতে পারেন। তবে খাওয়ার উপযুক্ত সময় সকালবেলা। প্রতিদিন ১ চামচ খাওয়াই যথেষ্ট। এমনি খেতে পারেন বা গরম দুধ বা জলের সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন।

চ্যবনপ্রাশ-এর উপকারিতা-
১) সাধারণত শীতের শুরুতে শুষ্ক আবহাওয়ায় বা ঋতু পরিবর্তনের সময়ে পরিবেশে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বাড়বাড়ন্তের ফলে শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই কাবু হয়ে যায়। সর্দিকাশি, ঠাণ্ডালাগা একপ্রকার লেগেই থাকে। তাই ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে ওষুধের মতো কাজ করে চ্যবনপ্রাশ।

২)  শুধু তাই নয়, চ্যবনপ্রাশ পাকস্থলীর অ্যাসিডগুলির যথাযথ জারণ ঘটায় এবং খাদ্য থেকে সংগ্রহ করা পুষ্টির রক্তে শোষণ ত্বরান্বিত করে। আমলকি হজম ক্ষমতা বাড়ায় ও কোষ্ঠকাঠিন্যর হাত থেকে মুক্তি দেয়।

৩) ক্রনিক শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা, যেমন হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদির সমস্যায় যারা ভুগছেন তাঁরা অবশ্যই চ্যবনপ্রাশ খান। চ্য কারণ এর মধ্যে থাকা নানা ভেষজ বনৌষধী ফুসফুস জনিত যেকোনো সমস্যাকে দূর করতে সাহায্য করে।

৪) অনেকেই জানেন না, চ্যবনপ্রাশের আর একটি অসাধারণ গুণ হল এটি অ্যন্টি এজিং ফর্মুলা সমৃদ্ধ।। ভরপুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি রক্তে হিমোগ্লোবিন- এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে আপনার ত্বকে শীতের রুক্ষটান যেমন পরবে না, তেমনই ত্বক হবে উজ্জ্বল ও ঝলমলে।

৫) এটি হার্টের যত্ন নেয়, এর মধ্যে থাকা অর্জুন হৃদপিণ্ডের খেয়াল রাখে, সঙ্গে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি রক্ত পরিশ্রুত করণে চ্যবনপ্রাশ অনবদ্য। বর্তমান ব্যস্তজীবনে জাঙ্কফুড খাওয়ার জন্য বা সঠিক ভাবে শরীরচর্চা না করার ফলে শরীরে নানারকম টক্সিন জমতে শুরু করে। চ্যবনপ্রাশ সেই টক্সিনকে বের করে দিয়ে রক্তকে করে বিশুদ্ধ।

৬) এখন কমবেশি সকলেই যে সমস্যায় ভুগছে তা হল স্ট্রেস। অফিসে ডেডলাইন থেকে শুরু করে বাড়ির অশান্তিচতে নাজেহাল? চ্যবনপ্রাশ-এর গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ উপাদান আপনার স্নায়ুকে করে তুলবে সক্রিয় করে তোলে এবং মানসিক চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।

৭) এছাড়াও চ্যবনপ্রাশ আপনার মেটাবলিক রেট বৃদ্ধি করে, ফলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ জমতে পারে না। তাই ওজন কমাতেও অব্যর্থ ভুমিকা পালন করে চ্যবনপ্রাশ।

৮) শিশুদেরও অবশ্যই চ্যবনপ্রাশ দিন। এতে ওদের মস্কিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে পড়াশোনা খুব সহজেই মনে থাকে। অতএব শিশুদের সার্বিক বৌদ্ধিক বিকাশ ও স্মৃতিশক্তিকে প্রখর করে তুলতে চ্যবনপ্রাশ অব্যর্থ।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.