করোনা আবহের মধ্যে এবার নয়া আতঙ্ক, শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বিরল কাওয়াসাকি ডিজিজ সিন্ড্রোমে!


Odd বাংলা ডেস্ক: গত কয়েক মাস ধরে দিল্লির বেশ কয়েকটি হাসপাতালে কোভিড-১৯ পজিটিভ শিশুদের মধ্যে কাওয়াসাকি নামে একটি বিরল রোগের মতোই কিছু লক্ষণ দেখা গেছে। লক্ষণ হিসাবে দেখা দিয়েছে ব়্যাশ এবং প্রদাহ। গত মাসে মুম্বইতেও ঠিক এমন কিছু ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছিল। 

কাওয়াসাকি ডিজিজ হল এক সিন্ড্রোম যা, মূলত ৫ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের আক্রমণ করে, এবং এর ফলে জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।জ্বর থাকে ৫দিনেরও বেশি সময় ধরে। আর জ্বর কমাতে সাধারণ জ্বরের ওষুধে কোনও কাজ হয় না। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিশু হাসপাতাল দিল্লির কালাওয়াতী শরণ-এ কাওয়াসাকির লক্ষণগুলি ৫-৬ জন শিশুর মধ্যে দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে ওই বাচ্চাদের জ্বর, ফুসকুড়ি বা ব়্যাশ, শ্বাসকষ্ট এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যা ছিল। পাশাপাশি সমস্ত শিশুর শরীরে করোনভাইরাস পজিটিভও ধরা পড়েছিল।

কাওয়াসাকি রোগ নিয়ে কিছু তথ্য-

কাওয়াসাকি ডিজিজ সিন্ড্রোম কী?
কাওয়াসাকি রোগ হল অনেকগুলো লক্ষণের সমষ্টি যেখানে জ্বর হল প্রাথমিক লক্ষণ এবং মূলত ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদেরকে এই রোগটি প্রভাবিত করে। এই অসুখে সারা শরীর জুড়ে রক্তনালীগুলি ফুলে উঠে যেটাকে বলা হয় Vasculitis। যার ফলে শরীরে তাপমাত্রা ১০২-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে যায়। দেখা দেয়, এটি পাঁচ দিনের মত স্থায়ী হয় এবং এটি সাধারণত প্যারাসিটামল বা অন্যান্য জ্বরের ওষুধ খেলেও কমে না।


কাওয়াসাকি রোগের লক্ষণ কী?
অন্যান্য সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ঘাড়ের দুই দিকে লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া, যৌনাঙ্গের চারিদিকে ফুসকুড়ি, চোখ-ঠোঁট বা জিভ গাঢ় লাল হয়ে যাওয়া, এমনকি পায়ের পাতাগুলিও রক্ত বর্ণ ধারণ করা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাচ্চার করোনারি আর্টারি-ও ফুলে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এই রোগকে স্কারলেট জ্বর (Scarlet Fever) বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস (Juvenile Rheumatoid Arthritis) মনে করে ভুল করা হয়। তবে আশার কথা হল, কাওয়াসাকি রোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে ভাল হয়ে যায়।

কাওয়াসাকি রোগের কারণ কী?
কাওয়াসাকি রোগের সুনির্দিষ্ট কারণটি এখনও জানা যায়নি। তবে মনে করা হয়, শিশুদের মধ্যে কোন জীবাণুর সংক্রমণ ঘটলে তার মোকাবিলা করার জন্য শরীরের যে প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে কোন কোন ক্ষেত্রে তা অত্যধিক সক্রিয় হয়ে ওঠে। যার ফলস্বরূপ জীবাণু ধ্বংস করার পাশাপাশি নিজের শরীরেই Vasculitis তৈরি করে। তবে এটি ছোঁয়াচে কোন অসুখ নয়।

কাওয়াসাকি রোগের সঙ্গে করোনাভাইরাসের সম্পর্ক কী?
আমরা সাধারণভাবে জানি কোভিড-১৯ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসতন্ত্রকে তথা Respiratoy System-কে আক্রমণ করে এবং রোগীর তীব্র শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য সহযোগী লক্ষণ প্রকাশ করে। কিন্তু এই মরণ ভাইরাস শুধু শ্বাসতন্ত্রই আক্রমণই নয়, এটি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে ব্যাপকভাবে আন্দোলিত করে। এই ভাইরাসের মোকাবিলায় শরীরের Macrophage-Phagocytic সিস্টেম এতটা সক্রিয় হয় যে কাওয়াসাকি রোগের মতো সকল লক্ষণ প্রকাশ হতে দেখা যায়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.