২৪ কিমি সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া মেয়েটিই এখন গ্রামের অনুপ্রেরণা



Odd বাংলা ডেস্ক: ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখার প্রতি অদম্য ভালবাসা আর বড় হয়ে ভালো কিছু করার ইচ্ছা রোশানির। মেধাবী এই মেয়েটি প্রতিদিন ২৪ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেত। যতই কষ্ট হোক, যতই বাধা আসুক, স্কুলে যেতেই হবে। এবার সেই পরিশ্রমেই মূল্য পেল সে। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফল করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে। 

 রোশানির বাড়ি ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভিন্ড জেলার অজপাড়া গ্রাম অঞ্জলে। পুরো নাম রোশামি ভাদুরিয়া। বাবা কৃষক। দিন আনি দিন খাই সংসারে পড়াশোনাকেই সবচেয়ে বেশি আপন করে নিয়েছিল মেধাবী কিশোরী। কিন্তু স্কুলে পৌঁছানো ছিল রীতিমতো দুঃসাধ্য ব্যাপার। প্রতিদিন ২৪ কিলোমিটার সাইকেলে যাতায়াত তো মুখের কথা নয়। তাছাড়া অনেকখানি সময়ও চলে যেত স্কুল যেতে-আসতেই। তারপরও বাড়ির কাজ করে মন দিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে রোশানি। মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলই তার সেই পরিশ্রমের ফসল। ৯৮.৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে গোটা মধ্যপ্রদেশে মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান দখল করেছে অদম্য এই কিশোরী। 

ইচ্ছা থাকলেই যে উপায় হয়, প্রমাণ করে দিয়েছে রোশানি। ১৫ বছরের কিশোরীই এখন গ্রামের অনুপ্রেরণা। মেয়ের কৃতিত্বে গর্বিত বাবা পুরুষোত্তম ভাদুরিয়া। এবার মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা করতে চান তিনি। বলছেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত রোশানি যে স্কুলে যেত, সেখানে বাস পরিষেবা ছিল। কিন্তু মেগাঁওয়ের সরকারি স্কুলে যেতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। গ্রাম থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সেই স্কুল। বাসও যায় না। অগত্যা সাইকেলই ভরসা। দু’বছর ধরে সাইকেলেই স্কুলে পৌঁছেছে। 

কিন্তু এবার মেধাবী মেয়ের জন্য অন্য গাড়ির বন্দোবস্ত করবেন বাবা। ছাত্রীর কৃতিত্বে গর্বিত তার স্কুলের শিক্ষকরাও। আর রোশানি? তার সব কষ্ট অবশ্য ভুলিয়ে দিয়েছে পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফল। বলছে, 'প্রতিদিন স্কুলে সাইকেল করে যেতে একটু অসুবিধা হত ঠিকই। তবে গুনে দেখিনি কতদিন সাইকেল চালিয়েছি। বাবার সময় থাকলে কখনো কখনো মোটরবাইকেও আমায় পৌঁছে দিত। আর বাড়ি ফিরে ৭-৮ ঘণ্টা পড়তাম।' ভবিষ্যতে কী করতে চায় সে? রোশানির ইচ্ছে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে আইএএস অফিসার হওয়া।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.