অনলাইনে ক্লাস করবে সন্তানরা, স্মার্ট ফোন কিনতে আয়ের একমাত্র উৎস গরুটি বেচে দিলেন কৃষক!
Odd বাংলা ডেস্ক: মহামারি পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতি যেমন যথেষ্ট প্রভাবিত হয়েছে, তেমনই দেশের শিক্ষাব্যবস্থাও এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। এই পরিস্থিতিত দেশজুড়ে সমস্ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তরফে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। আজ প্রায় চার মাসের বেশি সময় ধরে ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়িতে বসেই অনলাইনে ক্লাস করছে। কিন্তু এক দরিদ্র কৃষকের সন্তানরা স্মার্ট ফোনের অভাবে অনলাইন ক্লাস করতে পারছিল না, আর সেই কারণেই নিজের আয়ের একমাত্র উৎস গরুটিকে বিক্রি করতে বাধ্য হন।
হিমাচল প্রদেশের জ্বালামুখীর গামার গ্রামের এক দরিদ্র কৃষক কুলদীপ কুমার। মার্চ মাস থেকে লকডাউন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুলগুলিও বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর সন্তানরা, অন্নু চতুর্থ শ্রেণীতে এবং ডিপ্পু দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়াশোনা করত। স্কুলে অনলাইন ক্লাস শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে কুলদীপের উপর সন্তানের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য শিশুদের একটি স্মার্টফোন কেনার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল।
স্মার্টফোন কেনার জন্য কুলদীপ ব্যাঙ্ক এবং স্থানীয় কিছু মানুষের কাছে ৬০০০ টাকার জন্য ধার চান। কিন্তু তাঁর আর্থির অবস্থা দেখে, কেউই তাঁকে টাকা ধার দেওয়ায় রাজি ছিলেন না। অন্যদিকে স্কুলের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, সন্তানদের পড়াশোনা যদি চালিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে অনলাইন ক্লাসের জন্য স্মার্টফোন লাগবেই। তিনি বলেন, তাঁর কাছে ৫০০ টাকাও নেই, এই অবস্থায় ৬০০০ টাকা জোগাড় করাটা খুবই কঠিন কাজ।
সমস্তরকম চেষ্টা করেও যখন তিনি তাঁর সন্তানদের জন্য স্মার্টফোন কিনতে পারলেন না, তখন তিনি নিজের আয়ের একমাত্র উৎস গরুটিকে বিক্রি করে দেন ৬০০০ টাকায়। কুলদীপের মাটির বাড়ি, দারিদ্রসীমার নীচে থাকলেও বিপিএল কার্ড নেই, এমনকি তিনি ইন্ট্রিগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-এরও আওতাভুক্ত নন। কুলদীপ জানান, নিজের বাড়ি নির্মাণ এবং বিপিএল কার্ডের ডন্য প্রয়োজনীয় নথি জমা দিলেও কোনও লাভ হয়নি।
এই ঘটনার পর জ্বালামুখীর বিধায়ক রমেশ ধওয়ালা জানিয়েছেন যে সন্তানদের অনলাইন পড়াশুনার জন্য একজনকে ফোন কিনতে তার গরুবিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা সত্যিই অবাককরা। তিনি জানান,তাঁকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য বিডিও এবং এসডিএমকে নির্দেশ দিয়েছেন।
Post a Comment