করোনার মাঝে অবাক নাকের আপাতানিরা ভারতে একমাত্র সুরক্ষিত



Odd বাংলা ডেস্ক: উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচলের প্রধান নৃগোষ্ঠী আপাতানি৷ বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনযাত্রা, নারীদের নাকের অলঙ্কার আর ট্যাটুর জন্য ভারতে তারা আলাদাভাবে পরিচিত৷ আজকের প্রতিবেদনে থাকছে জিরো উপত্যকার এই বাসিন্দাদের গল্প৷

এক স্বতন্ত্র সভ্যতা

অরুণাচল প্রদেশের জিরো উপত্যকার ছবি এটি৷ ৩৭ হাজারের বেশি আপাতানির বসবাস এখানে৷ তাদের রয়েছে নিজস্ব জীবনযাত্রা, ভূমি ব্যবস্থাপনা৷ বাস্তুসংস্থান আর প্রকৃতি রক্ষায় রয়েছে গভীর জ্ঞান৷

নাকের প্লাগ

ছবির এই নারীর নাম টাডু রেলুং৷ জিরো উপত্যকার সবচেয়ে প্রবীণ নারী তিনি৷ মুখে ট্যাটু আর নাকের ঐতিহ্যবাহী এই প্লাগের জন্য সারা বিশ্বই আলাদা করে চেনে তাদের৷ এই প্লাগটির নাম ইয়াপিং হুলো৷ এটি তৈরি হয় গাছের কাঠ থেকে৷ ১৯৭০-এর দশক থেকে নাকে এমন প্লাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সরকার৷ বয়স্ক নারীদেরই এখনো ইয়াপিং হুলো পরতে দেখা যায়৷

নতুন আকর্ষণ

কেন এই প্লাগ পরতেন সেখানকার নারীরা? কারো মতে সৌন্দর্যের জন্য, কারো মতে প্রতিদ্বন্দ্বী উপজাতিদের হাত থেকে নিজেদের নারীদের রক্ষা করতে এর প্রচলন শুরু৷ কারণ যা-ই হোক, ধীরে ধীরে এই ঐতিহ্য থেকে সরে আসছেন আপাতানি নারীরা৷ সেখানকার নতুন আকর্ষণ এখন কিউই ফলের ওয়াইন৷



কিউই মদ

অরুণাচলের অধিবাসীরা কিউইর চাষ বলতে গেলে ছেড়েই দিয়েছিল৷ তবে পরিস্থিতি বদলে দিয়েছেন তাখে রিতা৷ কৃষি প্রকৌশলের এই ছাত্রী ২০১৬ সালে নিজের গ্রামে মদের কারখানায় বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন৷ এক বছর পর তিনি নিজের বাগান আর রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা কিউই থেকে নতুন মদ তৈরি করেন৷

সহজ নয়

মদ তৈরির গাজন প্রক্রিয়াটি বেশ সময়সাপেক্ষ৷ যার জন্য সাত থেকে আট মাস অপেক্ষা করতে হয়৷ তবে শুধু অরুণাচল নয়, এই মদ পাওয়া যায় পার্শ্ববর্তী আসাম আর মেঘালয় রাজ্যেও৷ ভারতের বাইরেও পানীয়টি রপ্তানির পরিকল্পনা চলছে৷ রিতা এরই মধ্যে স্থানীয় কৃষকদের কিউই উৎপাদনে ও চাষে সহযোগিতা করছেন৷ দিচ্ছেন ফলটি বিক্রির নিশ্চয়তাও৷

আয়ের নতুন খাত

টিলিং চাদা এবং টিলিং ইয়ানেং বহু বছর ধরে কিউই চাষের সঙ্গে জড়িত৷ কিন্তু কিউই মদ এখন তাদেরকে জীবনধারণের জন্য আয়ের নতুন উৎসের সন্ধান দিচ্ছে৷ তাদের মতে, কিউই উৎপাদন করা নিজের সন্তান লালনের মতো৷ তিন বছর ভালোবাসা আর যত্নে বড় করতে হবে তাদের৷ তার পরই প্রথম ফলন মিলবে৷

রাসায়নিকমুক্ত চাষ মদ উৎপাদনের কারণে জিরো উপত্যকার কিউই চাষিরা আবারও ফিরেছেন তাদের পুরনো পেশায়৷ এখানকার উজ্জ্বল সূর্যালোকে কোনো ধরনের রাসায়নিক ছাড়াই ফলটি হয়৷ জিরো উপত্যকার পাহাড়ের ঢালে কিউই বাগানের দেখা মিলবে৷

করোনায় তারা কেন সুরক্ষিত: 
আপাতানিরা সাধারণ জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্নভাবে জীবন কাটায়। আর সে কারণেই তাদের শরীরে ভাইরাস প্রবেশের সম্ভাবনা কম। আবার অনেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই জনজাতিই এখন ভারতে সবচেয়ে বেশি সুরক্ষিত কারণ তাদের খাওয়া দাওয়ার নিয়ম ও বহুবিধ আয়ুর্বেদিক দ্রব্য খাদ্য হিসেবে গ্রহণ। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.