দেশে তবে কি এখন থেকে অপরাধীদের হত্যা করা হবে? 'এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট’ হেসে বললেন- 'নো কমেন্টস'



Odd বাংলা ডেস্ক: তার মোবাইলের কলার টিউন হল- ওয়েলকাম টু পিপল-ফ্রেন্ডলি পুলিশ, তেলাঙ্গানা পুলিশ। গতকাল স্থানীয় সাংবাদিকরা সারাদিনে বার বার ফোন করে কলারটিউন মুখস্থ হয়ে যাওয়ার পর অবশেষে সন্ধ্যায় সাইবারাবাদের পুলিশ কমিশনার ভি সি সজ্জনারকে ফোনে পান। কল রিসিভ করেই হাসি। বলে ওঠেন, সারাদিন এ ব্যাপারেই ফোন আসছে। কিন্তু আমার দিক থেকে, নো কমেন্টস। মোবাইলে কল আসার কারণ হলো- শুক্রবার ভোরে উত্তরপ্রদেশের পুলিশের এনকাউন্টারে কুখ্যাত গ্যাংস্টার বিকাশ দুবে নিহত হওয়ার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটাই নাম নিয়ে আলোচনা। আইপিএস অফিসার ভি সি সজ্জনার। বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে ‘বিখ্যাত’ বা ‘কুখ্যাত’ এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট তিনিই। সাইবারাবাদের পুলিশ কমিশনার তিনি। এ ঘটনায় অনেকেরই গত বছরের ৬ ডিসেম্বরে হায়দরাবাদের এনকাউন্টারের ঘটনা মনে পড়ে গেছে। ঘটনাচক্রে সেদিনও ছিল শুক্রবার।

তেলাঙ্গানার শামসাবাদের টোলপ্লাজার কাছে এক চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছি দুষ্কৃতিকারীরা। তারপর তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু ৬ ডিসেম্বর ভোররাতে পুলিশের এনকাউন্টারে চারজনই মারা যায়। সজ্জনার দাবি করেছিলেন, তদন্তের জন্য চার অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারা পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি চালায়। বিকাশ দুবের এনকাউন্টারের পর সজ্জনারের ছবি নিয়ে মিম তৈরি হয়েছে, কর ও রাহে হ্যায়, লেকিন তরিকা হমারা হ্যায়।

এনকাউন্টারের ঘটনা সাজানো বলে অভিযোগ ওঠার পর সুপ্রিম কোর্ট সাবেক বিচারপতি ভি এস সিরপুরকারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিশনের নির্দেশ দেয়। সেই তদন্ত এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। সাংবাদিকরা জানতে চান, আপনি কি মনে করেন, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ঠিক কাজ করেছে? সজ্জনার হাসতে হাসতে বলেন, আমি এ নিয়ে এখন কিছু বলব না। সবাই তো বলছে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তেলাঙ্গানার এনকাউন্টার দেখেই শিক্ষা নিয়েছে। সজ্জনার বলেন, তেলাঙ্গানার এনকাউন্টার এখনো আদালতের বিচারাধীন বিষয়। তাই এ নিয়ে আমার মুখ খোলা উচিত হবে না। কমিশনের তদন্ত শেষ হোক। তারপরে যা বলার বলব।

২০০৮ সালে অন্ধ্র প্রদেশের ওয়ারাঙ্গলে কলেজ ছাত্রীদের ওপর অ্যাসিড হামলায় অভিযুক্তদের এনকাউন্টার, ২০১৫ সালে নালগোন্ডায় সিমি বিকারুদ্দিন আহমেদের এনকাউন্টার, ২০১৬ সালে মাওবাদী নেতা নঈমুদ্দিনের এনকাউন্টার—একাধিক অপারেশনে নেতৃত্ব দিয়েছেন সজ্জনার। কিন্তু হায়দরাবাদ এনকাউন্টারের পরে সজ্জনার ‘সিংহাম’-এর তকমা পেয়েছিলেন। দক্ষিণী ছবির নায়িকারা সজ্জনারের ‘ইনস্ট্যান্ট পানিশমেন্ট’ নীতির জন্য তাকে দক্ষিণী সেলুলয়েডের নায়ক বিজয়ের সঙ্গেও তুলনা করেন। এ সব শুনে সজ্জনার শুধু হাসেন। আর বলেন, নো কমেন্টস।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.