বাজারে আসার আগেই করোনার টিকা সমস্ত কিনে নিচ্ছে কোটিপতি কোম্পানিগুলি
Odd বাংলা ডেস্ক: করোনার টিকা নিয়ে এই মুহূর্তে বিশ্বে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাকে বলেছে ‘কুকুরের কামড়াকামড়ি।’ বিশ্বের ধনী দেশগুলো ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বাজারে আসার আগেই কোটি কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করে ফেলছে। নিজেদের নাগরিক ছাড়া অন্য কোনো দেশের মানুষের কথা ভাবতে নারাজ তারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ এই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নীরব দর্শক হয়ে টিকার এই কাড়াকাড়ি দেখতে হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যে পিফজার, বায়োটেক, আস্ট্রাজেনেকা ও মর্ডানার সঙ্গে টিকার ডোজ কেনার চুক্তি সেরে ফেলেছে। অন্য কোনো দেশকে সরবরাহ করার আগে চুক্তিভুক্ত এই দেশ ও অঞ্চলকে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকা সরবরাহ করতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের টিকা নিশ্চিত প্রকল্প কোভাক্সের সহ-নের্তৃত্বাধীন গাভি জোটের প্রধান নির্বাহী সেথ বার্কলে বলেছেন, ‘সবাই দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করছে যা আশাবাদী পরিস্থিতির পথ নয়।’
পিফজার জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে ইইউ ও বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য টিকার সরবরাহ চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেছে।
সর্বশেষ বুধবার আরও ছয় কোটি ডোজ টিকা কিনতে বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান গ্ল্যাক্সো স্মিথক্লাইন (জিএসকে) ও সানোফির সাথে চুক্তি করেছে ব্রিটিশ সরকার। এ নিয়ে ব্রিটেন চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২৫ কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করলো।
বৈশ্বিক চিকিৎসা বিষয়ক দাতব্য সংস্থা ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার এ ব্যাপারে বলেছে, এটি টিকা নিয়ে ধনী দেশগুলোর হুড়াহুড়ি আরও বাড়িয়ে দেবে এবং ‘টিকা জাতীয়তাবাদ একটি বিপজ্জনক’ পর্যায়ে মোড় নেবে।
এর আগে ২০০৯-১০ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাস সংক্রমণকালে ধনী দেশগুলো বাজারে থাকা সব টিকা কিনে নিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দরিদ্র দেশগুলোর ভাগ্যে কোনো টিকার ডোজ জোটেনি।
সৌভাগ্যক্রমে ওই সময় ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারির রূপ নেয়নি এবং সংক্রমণের কারণে মৃত্যুর হার ছিল একেবারে কম। তবে এবার করোনাভাইরাস মহামারির চিত্রটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিশ্বের প্রায় সব দেশে সংক্রমণ ঘটিয়েছে এই ভাইরাস। আক্রান্ত হয়েছে এক কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষ।
মারা গেছে প্রায় ছয় লাখ আক্রান্ত। শুধু তাই নয়, আক্রান্ত ব্যক্তির দেহেও ক্ষতির চিহ্ন রেখে যাচ্ছে এই ভাইরাস।
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের সাবেক প্রধান নির্বাহী গাইল স্মিথ বলেন, ‘আমার ঠিক যা আশঙ্কা করছিলাম-প্রত্যেকে নিজের জন্য, ঠিক সেই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটিই করছে কিছু দেশ।’
Post a Comment