কে এই কুখ্যাত ডন বিকাশ? যাকে ধরতে গিয়ে ৮ পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হল?
Odd বাংলা ডেস্ক: উত্তর প্রদেশের এক কুখ্যাত ডনকে ধরতে গিয়ে গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন ডেপুটি সুপারসহ আট পুলিশ সদস্য। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো চারজন। আজ শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে উত্তর প্রদেশের কানপুরের চৌবেপুর থানার ডিক্রু গ্রামে।
কুখ্যাত ওই ডনের নাম বিকাশ দুবে। 'শিবলি ডন' নামে পরিচিত বিকাশ ও তার অনুসারীদের গুলিতে শুক্রবার ভোররাতে আট পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়। উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে মারা যায় দুই সন্ত্রাসীও; কিন্তু তার পরও ধরা যায়নি ওই কুখ্যাত ডনকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুখ্যাত এই ডনের অপরাধে হাতে খড়ি হয়েছিল ২০০০ সালে। কানপুরের তারাচাঁদ ইন্টার কলেজের অধ্যক্ষ ও সহকারী ম্যানেজার সিদ্ধেশ্বর পাণ্ডে খুনের ঘটনায় প্রথম নাম জড়ায় বিকাশের। তারপর এক বছরের মধ্যেই স্থানীয় মানুষের কাছে ত্রাসে পরিণত হয় সে। ২০০১ সালে শিবলি পুলিশ স্টেশনের মধ্যেই তৎকালীন উত্তর প্রদেশ সরকারের এক মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা সন্তোষ শুক্লাকে খুন করে বিকাশ ও তার সঙ্গীরা। এ ঘটনায় মৃত্যু হয় দুই পুলিশ সদস্যেরও। আর এ ঘটনাই কানপুর তথা উত্তর প্রদেশের অপরাধ জগতে বিকাশের উত্থানের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। কুখ্যাত গ্যাংস্টার হিসেবে নাম ছড়িয়ে পড়ে বিকাশের।
তার পর থেকে আস্তে আস্তে গত ২০ বছরে অন্তত ৬০টি খুন, অসংখ্য ডাকাতি ও অপহরণের মামলা দায়ের হয় তার নামে। একের পর এক অপরাধের সিঁড়ি বেয়ে কানপুরজুড়ে তাণ্ডব চালাতে থাকে বিকাশ ও তার সঙ্গীরা। যে দেহাতি এলাকায় বিকাশের বাড়ি, সেই গ্রামের যুবকরাও আস্তে আস্তে বিকাশের দলে নাম লেখাতে থাকে। ফলে লোকবল বাড়তে থাকে তার। ক্ষমতা আরো বাড়াতে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টিতেও যোগ দেয় বিকাশ। এমনকি নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনে দাঁড়িয়ে সদস্য হিসেবেও নির্বাচিত হয় সে।
তবে মায়াবতী ক্ষমতা থেকে সরতেই তার রাজনৈতিক প্রতিপত্তি কমতে থাকে। একসময় বিকাশের খোঁজ দিতে পারলে ২৫ হাজার রুপি পুরস্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে প্রশাসন। পাশাপাশি বেশ কয়েকবার তাকে গ্রেপ্তারও করে উত্তর প্রদেশ পুলিশের এসটিএফ। কিন্তু প্রতিবারই নিজের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে অল্প কয়েক দিন জেল খাটার পর বেরিয়ে আসে কুখ্যাত ওই ডন।
সম্প্রতি কানপুরের বিকরু গ্রামের পুলিশ স্টেশনে রাহুল তিওয়ারি নামে এক ব্যক্তি বিকাশের নামে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিকাশের গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। এর মাঝেই একটি বাড়ির ওপর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে বিকাশ ও তার সঙ্গীরা। এর ফলে একজন ডিএসপিসহ আট পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়।
Post a Comment