প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধরা, লোকলজ্জার ভয়ে তরুণীর আত্মহত্যা



Odd বাংলা ডেস্ক: ঘটনা বাংলাদেশের। লোকলজ্জার ভয়ে উল্লাপাড়ার দুর্গানগর ইউনিয়নের ভাদালিয়াকান্দি গ্রামে সুফিয়া খাতুন (১৯) নামের এক তরুণী আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তিনি এই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ভোরে। এ ব্যাপারে সুফিয়ার বাবা শুক্রবার সন্ধ্যায় উল্লাপাড়া মডেল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচণার একটি মামলা দায়ের করেছেন। আনোয়ার হোসেন জানান, তার মেয়ে সুফিয়ার ১ বছর আগে বিয়ে হয়। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে কিছুদিন আগে তাদের বিয়েবিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসায় নতুন করে লেখাপড়া শুরুর জন্য নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। মাদরাসায় পড়াশোনাকালে উপজেলার নন্দীবেড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে পলাশ হোসেন (২০) এর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পলাশ মাঝে মাঝেই তার বাড়িতে আসতেন ও কথা বলতেন। গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) মধ্যরাতে পলাশ তার দুই সহযোগীকে নিয়ে সুফিয়াকে বাড়ি থেকে ডেকে নৌকায় করে সামনের মাঠের দিকে চলে যান। বিষয়টি টের পেয়ে আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই আফছার আলীকে নিয়ে চিৎকার করে নৌকা থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু নৌকা না থামালে তারা পাশের রাস্তা দিয়ে দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকাটি ধরে ফেলেন। এসময় পলাশ ও তার এক সহযোগী আল আমিন (বিশা) নিয়ে পালিয়ে যান। 

কিন্তু পলাশের অপর সহযোগী জাহিদুলকে লোকজন ধরে আটক করেন এবং সুফিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন। তারা উল্লাপাড়া মডেল থানায় খবর দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক জাহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। এদিকে সুফিয়াকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি গোপনে বিষ পান করেন। তাকে রাতেই গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে সেখানে তার মৃত্যু হয়। উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাশ জানান, নিহত সুফিয়ার বাবা উল্লাপাড়া থানায় তার মেয়েকে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ এনে পলাশ হোসেন এবং আল আমিন (বিশা) ও পুলিশের হাতে আটক জাহিদুল ইসলামকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ সুফিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে জনতার হাতে আটক জাহিদুল ইসলামকেও আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে। ওসি আরো জানান, লোকলজ্জার ভয়ে সুফিয়া আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.