শান্তির পথে আফগানিস্তান, ৪০০ তালিবানকে মুক্তির সিদ্ধান্ত



Odd বাংলা ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান শান্তির পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। ৪০০ তালিবান বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল দেশটির সংসদ লয়া জিরগা। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই তাদের মুক্তি দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তালিবান বলেছে, বন্দিমুক্তির ১০ দিনের মধ্যে শান্তি বৈঠকে বসতে প্রস্তুত তারা। আফগান সরকারও লয়া জিরগার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তালিবানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দেশটির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাদের শক্ত ঘাঁটি এখনো অটুট। 

দীর্ঘ যুদ্ধের পর অ্যামেরিকাও সেই সত্য বুঝতে পেরেছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দোহায় তালিবানের সঙ্গে ঐতিহাসিক শান্তি বৈঠক হয়েছিল আমেরিকার। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছিল পাঁচ হাজার তালিবান বন্দির মুক্তি দেওয়া হবে। মাঝে কেটে গেছে পাঁচ মাস। তালিবানের অভিযোগ, এখনো পর্যন্ত সেই চুক্তি মেনে আফগান সরকার সমস্ত বন্দিকে মুক্ত দেয়নি। গত এক মাসে সরকার এবং তালিবান- দুই পক্ষই নতুন করে অশান্তিতে জড়িয়েছে। কিন্তু দুই পক্ষই চাইছিল একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক। ফলে তালিবান ঘাঁটিতে আফগান সরকার এয়ারস্ট্রাইক করার পরেও শান্তির কথা বলেছে তালিবান। শান্তি বৈঠক যে জরুরি তা বুঝতে পারছিলেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। 

সে কারণেই বৈঠকে বসেছিল লয়া জিরগা। লয়া জিরগা দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদ। বিভিন্ন জনজাতির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই সংসদের অংশ। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। সপ্তাহান্তে বৈঠক করে তারা সিদ্ধান্ত নেন দ্রুত ৪০০ তালিবান বন্দির মুক্তি দেওয়া হবে। সংসদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে সরকার। বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব এ কাজ করা হবে। সংসদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছেন, বন্দি মুক্তির ১০ দিনের মধ্যে আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তি বৈঠকে বসতে রাজি তালিবান নেতৃত্ব। 

এর আগে তালিবান নেতারা জানিয়েছিলেন, ঈদের পর সরকারের সঙ্গে শান্তি বৈঠকে বসতে রাজি তারা। প্রশ্ন হলো, শান্তি বৈঠক হলেই কি আফগানিস্তানে শান্তি ফিরবে? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে যুদ্ধ চলেছে আফগানিস্তানে। শান্তি না এলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকার এবং তালিবান দুই পক্ষই সে কথা বুঝতে পারছে। ফলে দুই পক্ষই শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। আমেরিকাও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা হলে আফগানিস্তান থেকে সমস্ত বিদেশি সৈন্য চলে যাবে। নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে আফগানিস্তান। ফলে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, এ কথা বলাই যায়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.