জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের ৬০ বছর, নারীর যৌনতায় যুগান্তর এনেছিল যে বস্তু
Odd বাংলা ডেস্ক: আজ থেকে ঠিক ৬০ বছর আগে নারী যৌনতায় বিপ্লব ঘটাতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের উদ্ভব৷ নারীর শারীরিক আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এ এক মাইলফলক৷ ১৯৬০ সালের ১৮ আগস্ট মার্কিন কম্পানি সার্ল অ্যান্ড কো. প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে হরমোন গর্ভনিরোধক পণ্য এনোভিড বাজারে ছাড়ে, যেটাকে নারীর শারীরিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এক মাইলফলক হিসেবে ধরা হয়৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হরমোনের গর্ভনিরোধক গবেষণার কাজে নারী অধিকার কর্মী মার্গারেট স্যাঙ্গার এবং ক্যাথরিন ম্যাকোর্মিক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন৷
১৯৬১ সালে 'আনোভলার' নামে গর্ভনিরোধক পিল প্রথম জার্মানির বাজারে আসে৷ সেটা প্রাথমিকভাবে ঋতুস্রাবের প্রতিকার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে৷ তাছাড়া বিবাহিত নারীদের মধ্যে যারা এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি সন্তানের মা, তাদেরই কেবল পিল কেনার অনুমতি ছিল৷
গর্ভনিরোধক পিলের প্যাকেটে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার উল্লেখ থাকায় সেটাও অনেকের মধ্যে দ্বিধার সৃষ্টি করেছিল৷ সেসময় খুব কম চিকিৎসকই জন্মনিয়ন্ত্রণপিল সেবনের পরামর্শ দিতেন৷ ফলে বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রে বড়ি পাওয়া খুব কঠিন ছিল৷ চিকিৎসক এবং রক্ষণশীল রাজনীতিবিদরাও জন্মনিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেটের বিপক্ষে ছিলেন, বিশেষ করে ক্যাথলিক চার্চ গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট প্রবর্তনের তীব্র বিরোধিতা করেছিল৷
কঠোর নিন্দা করেছিলেন ষষ্ঠ পোপ পল৷
১৯৬৮ সালে যখন জাতিসংঘ পরিবার পরিকল্পনার অধিকার ঘোষণা করে এবং বড়ি সম্পর্কে আরো গবেষণার ফলাফল পাওয়া যায়, তখন জার্মান চিকিৎসকরা পিলের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব শিথিল করেন৷ তারপর থেকে জার্মানিতে আরো বেশি সংখ্যক মহিলা জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পিল সেবন শুরু করেন৷ এমনকি জন্মনিয়ন্ত্রণের কারণে নারীরা স্বাধীনভাবে পড়াশোনা করতে পারায় শিক্ষিত নারীর সংখ্যাও বেড়েছে৷
জার্মানিতে জন্মনিরোধক হিসেবে পিল এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয়৷ জানুয়ারি মাসে ফেডারেল সেন্টার ফর হেলথ এডুকেশনের করা এক জরিপে জানা যায়, ১৮ থেকে ৩৯ বছর বয়সিদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ নারী জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পিলকেই বেছে নেন৷
জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল আসলে কী?
এগুলো মূলত ইস্ট্রোজেন-প্রজেস্টেরন হরমোনের বড়ি। ওইসব বড়ি খেলে ওভিউলেশন বা ডিম্বাণু নির্গমন হয় না। ফলে গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনাও থাকে না। সাধারণত দুই ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বাজারে পাওয়া যায়। একটিতে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন থাকে এবং অপরটিতে শুধু প্রোজেস্টেরন থাকে। দুটিই গর্ভসঞ্চার রোধে সমান কার্যকরী। কিন্তু প্রথম পিলটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এই দুই ধরণের পিল পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং ব্যথা কমায়। যেসকল বড়িতে কেবল প্রোজেস্টেরন থাকে, সেগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে খেতে হয়।
Post a Comment