কখনও লকডাউন, কখনও আনলক-এসবের মাঝে ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না? মেনে চলুন কিছু সহজ টিপস


Odd বাংলা ডেস্ক: করোনাভাইরাসের জেরে আমরা অনেক নতুন নতুন শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে। লকডাউন, হোম কোয়ারেন্টাইন, সেল্ফ আইসোলেশন ইত্যাদি ইত্যাদি। করোনাভাইরাসের জেরে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই লকডাউন বা এই আনলক। এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে থেকে অফিসের কাজ ও বাড়ির কাজ একসঙ্গে সামলাতে গিয়ে মানসিক এবং শারীরিক দুর্বলতা মিলেমিশে একাকার।

আর এর জেরে ঘুমের ওপর একটা বিরাট প্রভাব পড়েছে। পারিপার্শিক পরিস্থিতিতে অল্প ঘুম, ক্লান্তি, উদ্বেগ, কাজের গতি হ্রাস ইত্যাদির খুবই পরিচিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া এবং অনিদ্রা আপনার শরীরের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এর জন্য আপনার জীবনযাত্রার পরিবর্তন করাটা খুবই দরকার। এই মহামারি পরিস্থিতিতে রাতের ঘুমে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য মেনে চলুন এই সহজ কয়েকটি টিপস-

১. একটি রুটিন তৈরি করুন - লকডাউনের পর সকলের জীবনের অনেক নিয়ম বদলেছে। সেই রুটিনটি আগে ঠিক করতে হবে। সব রকম কাজে ভারসাম্য বজায় রেখে কাজ করতে হবে। এই ছোট ছোট জিনিসগুলির ফলে আমাদের মস্তিষ্ক নির্ধারিত ঘুমের সময়সূচি গুলিয়ে ফেলতে পারে, যার ফলে আপনার পক্ষে সময়মতো ঘুমিয়ে পড়াটা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। অতএব এটিকে একটি দৈনিক রুটিনের জায়গায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। রুটিন মেনে চললে আপনার শরীর আপনার নির্ধারিত সময়গুলি মেনে চলতে শিখবে এবং যখন ঘুমানোর সময় এবং ঘুম থেকে ওঠার সময় আপনা থেকেই আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেবে।

২. রুটিনে যোগ ব্যায়াম অবশ্যই রাখুন- প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করুন। সকালে উঠে ব্যায়াম করলে রাতে ঘুমও ভাল হবে। ব্যায়াম শরীরের এনার্জিকে বাড়িয়ে তোলে,শরীরকে সতেজ রাখে। তাই বলে অতিমাত্রায় এক্সারসাইজ করবেন না। এতে আপনি আরও দুর্বল হয়ে পরতে পারেন।

৩. সকালে উঠে রোদে দাঁড়ান - সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে চেষ্টা করুন। সকালে উঠলে শরীরে কোনও রকম আলসামি থাকে না। শরীর সতেজ থাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ হালকা রোদের নীচে দাঁড়ান। শরীর ঝরঝরে থাকবে।

৪. বেডরুমে বসে অফিসের কাজ করবেন না - বেডরুমকে কখনওই কাজের জায়গা করে তুলবেন না। বিছানায় বসে কাজ করলে সারাক্ষণ শুয়েই কাজ করতে ইচ্ছে করবে। তার থেকে বরং টেবিল চেয়ারে বসে কাজ করা ভাল। এতে কাজে মনও বসে তাড়াতাড়ি। দিন ভাল যায় এবং রাতে ঘুমও ভাল হয়।

৫. সন্ধ্যাবেলা চা বা কফি খাবেন না - সন্ধ্যাবেলা চা বা কফি একদম খাওয়া উচিত নয়। এতে রাতের বেলা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। কফি বা চা খেলে ১২ ঘন্টা তারা এনার্জি বুস্টিং করতে পারে যার জন্য রাতে ঘুম নাও আসতে পারে। ব্ল্যাক টি বা ব্ল্যাক কফি তো কোনও মতেই সন্ধের পর খাওয়া উচিত নয়।

৬. রাতে ফোন কম ঘাটা - কোয়ারান্টাইনে সবার ল্যাপটপ কিংবা ফোনের মাধ্যমে কাজের চাপ ভীষণ ভাবে বেড়েছে। এছাড়াও শুয়ে বসে সারাক্ষণ সিনেমা, সিরিয়াল, ওয়েবসিরিজ, নেটফ্লিক্স কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ থাকার ফলে চোখে এবং মস্তিষ্কে চাপ পরছে। তাই কাজ করার মাঝে দুই একবার উঠে ৫-১০ মিনিটের ব্রেক নেওয়া উচিত। আর রাতে ঘুমানোর আগে বেশি ফোন ঘাঁটা একদম উচিত নয়। তাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এর ফলে অনিদ্রার সমস্যাও আসতে পারে। 

. ঘুমোনোর আগে স্নান করুন - ঘুমানোর আগে পারলে উষ্ণ জলে স্নান করে নিন। এর ফলে আপনার শরীরে সারাদিনের ক্লান্তি অনেক দূর হবে। উষ্ণ গরম জল আপনার চোখকে ভারী করে তুলবে এবং রাতে ঘুম আসতে সাহায্য করবে।

৮. ঘুমানোর আগে চিন্তা করুন - ঘুমানোর আগে সারাদিনের ভাল-খারাপ ঘটনা গুলোকে নিয়ে চিন্তা করুন। কোনও বিষয় সম্পর্কে নিজের চিন্তা গুলোকে আরও বিস্তারিতভাবে ভাবার চেষ্টা করুন। এর ফলে মানসিক চাপ অনেক হালকা হয়ে যায়। ঘুম তাড়াতাড়ি আসে।

৯. রাত্রে বেলা কম খাবার খান - রাতের বেলায় কম খাওয়া উচিত। বেশি মাত্রায় খেলে শরীরে অস্বস্তি বাড়ে। রাতের বেলায় হজম শক্তিও কমে আসে। এর ফলে পেটে ব্যথাও শুরু হতে পারে। তাই রাতের বেলায় পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত৷ তাতে ঘুমও ভাল হবে৷
Blogger দ্বারা পরিচালিত.