তামিলনাডুর এই শিল্পী পেনসিলের নিবের ওপর অভাবনীয় সব ভাস্কর্য তৈরি করে চলেছেন
Odd বাংলা ডেস্ক: নাম কৈলাশ বাবু। হ্যাঁ বাবুটাই পদবী। কৈলাস বাবুর বয়স তখন ১৮ বছর, তখন তিনি তার দাদার ফেসবুক টাইমলাইনের একটি ছবি দেখে অবাক হয়েছিলেন। ছবিটি ছিল ব্রাজিলিয়ান শিল্পী 'ডাল্টন ঘেত্তির' পেন্সিলের নিব খোদাই করে তৈরি একটি জিরাফের ভাস্কর্য । চিত্রটির বিশদ বিবরণে ছিল, ব্যাসে মাত্র কয়েক মিলিমিটার। এই ভাস্কর্য্টাই তাকে প্রেরণা যোগায়।
গত ছয় বছরে, তামিলনাডুর তিরুভাল্লুরে ২৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি পেনসিলের নিবের উপর ২০০-টিরও বেশি ক্ষুদ্র ভাস্কর্য খোদাই করেছেন। যার মধ্যে কিছু ০.৭ মিমি ব্যাসের মত ছোট। তার খোদাই করা ভাস্কর্যগুলির মধ্যে নবজাতকের সাথে একটি নারী -র ভাস্কর্যের সাথে সাথে বইয়ের সেল্ফ, বর্ণমালা, কৃষক, পাখী, যানবাহন, মুখ এমনকি বিভিন্ন সরঞ্জামের ভাস্কর্যও রয়েছে। সেই বছরের এপ্রিলে চেন্নাইয়ের ললিত কলা আকাদামির একটি শিল্প প্রদর্শনীতে কৈলাসের রক্তাক্ত স্যানিটারি ন্যাপকিনের খোদাই করা ভাস্কর্য- যার শিরোনাম ছিল - 'এ জাতীয় নিষেধাজ্ঞার বিরুধ্যে আমি কথা বলতে চাই' তা সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল।
কৈশোরকালে যখন তার সমবয়স্করা বাইরের গাড়ি ও মানুষ দেখতে ব্যস্ত থাকত, ঠিক তখন সে বাড়ির বাগানে শুয়ে পোকা- পিঁপড়ে মন দিয়ে দেখত। শিল্পের প্রতি অনুরাগ তার মধ্যে প্রকৃতিই এনে দিয়েছিল।সে দেখত পোকাগুলো কীভাবে মাটি জুড়ে পিঁপড়ে খুঁজছে। তার ফটোগ্রাফিরও শখ ছিল। নিজের দাদার ক্যামেরা দিয়ে সে ছবি তুলতে ভালোবাসত। কৈলাস ঘেত্তির কাজে যুক্ত হওয়ার আগে ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার হওয়ার শখ ছিল।। যখন কৈলাস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তখন ঈনস্টাগ্রামে রাশিয়ান শিল্পী সালাওয়াত ফিদাইয়ের কিছু ভাস্কর্য খুঁজে পেয়েছিলেন।
এগুলো দেখে কৈলাস তাঁর নির্মাণগুলি আরও কীভাবে সুন্দর হতে পারে সে সম্পর্কে ধারনা নিতেন। কৈলাস একটু একটু করে তাঁর তৈরি ভাস্কর্যের ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করতে থাকেন । এবং অন্যান্য দেশের মতো করে উন্নত ভাস্কর্যের কাজ শুরু করেন ।
তিনি বলেন, একটি ভাস্কর্য্য নির্মাণে তার গড়ে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। তিনি প্রথমে তাঁর নকশার একটি বড় স্কেচ কাগজে তৈরি করেন, তারপরে কাঠের একটি নলাকার ব্লকে তাঁর নকশা তৈরি করে নেন। এটাই হল তার প্রিপ্রোডাকশন।
তারপর তিনি আসল সেটা দেখে পেনসিলের নিব খোদাই করতে শুরু করেন। পুরোটাই কিন্তু করেন খালি চোখে কোনও আতস কাঁচ ব্যবহার করেন না। কৈলাশ চেন্নাই, বেঙ্গালুরু এবং হায়দ্রাবাদে তার ভাস্কর্যের প্রদর্শণী করেছেন। তিনি চান তাকে দেখে মিনিয়েচার আর্টে আরও শিল্পীরা কাজ করেত আসুক।
Post a Comment