ওয়েব সিরিজের নামে নীল ছবি! গালি দিচ্ছে, তেমনি চুমু, হস্তমৈথুন, যৌনতা




Odd বাংলা ডেস্ক: পাশের দেশ বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ওয়েব সিরিজ প্রোডাকশন। পচা, নষ্ট, দুর্গন্ধ- যখন থেকেই বাংলাদেশ ওয়েব সিরিজ নির্মাণ শুরু হয়েছে এমন বহু কথা শোনা যায়। তা নিয়ে লেখালেখিও কম হয়নি। সর্বশেষ শিহাব শাহিনের পরিচালনায় ‘আগস্ট ১৪’ আলোচিত হলো, আবার নতুন করে সবাই পচা দুর্গন্ধ বলে ধোঁয়া তুলেছে। সবাই লিখছে। তারকারা কিংবা যারা একটু নাটক সিনেমার খোঁজ খবর রাখছেন সবাই আলোচনাও করছেন। ওয়েব সিরিজ তিনটি হলো- ওয়াহিদ তারিকের ‘বুমেরাং’, সুমন আনোয়ারের ‘সদরঘাটের টাইগার’ ও শিহাব শাহীনের ‘আগস্ট ১৪’। 

 এই প্রসঙ্গটাই একটু ভিন্নভাবে দেখি। আমেরিকায় পর্ন ইন্ডাস্ট্রি আছে। সেখানে যারা কাজ করে তারা অনেকেই সমাজে তা পরিচয় দিয়েই করে। বলিউডে বি গ্রেড, সি গ্রেড সিনেমা আছে। অনেকেই জানেন না, ভারতেও পর্ন ইন্ডাস্ট্রিও আছে। তবে সেটা নিয়ে লেখালেখি হয় না বলে সবাই জানে না। দক্ষিণ ভারতে এই ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। সেখানে প্রযোজক আছে, নায়ক নায়িকাও আছে। তবে সেই ইন্ডাস্ট্রি এখন অনেকটাই আন্ডারগ্রাউন্ড। 

এক্ষেত্রে কলকাতার ‘শান্তিলাল ও প্রজাপতি রহস্য’ নামের একটা ছবি সাজেস্ট করা যায়। সিনেমাটি ভারতের পর্ন ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে বেশ তথ্যসমৃদ্ধ। ভারতীয় পর্ন ইন্ডস্ট্রির আধুনিক রুপ ‘উল্লু’, ‘হইচইর ওয়েব সিরিজগুলো। তো এই পর্নের গল্প কেন বলা? আপনার কি মনে হয় সরকারের ইচ্ছে হলো আর হুট করে সব পর্ন সাইট ব্লক করে দিলো? মোটেও এরকমটা না। সরকার দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে এর সাইড ইফেক্টগুলো বিচার বিশ্লেষণ করেই পর্ন সাইটগুলো ব্লক করেছে। এর সাইড ইফেক্ট কি? সহজ করে বললে, তৃতীয় বিশ্বে এর প্রভাব খুবই ভয়াবহ। যা একটা সমাজে ধর্ষণ বহুগুন বাড়িয়ে দেয়। আসলে পর্নের গল্প বলার কারণ ভিন্ন। কারণ এই ওয়েব সিরিজ। লেখার শুরু থেকে যেটা বলা হয়েছিল, বিভিন্ন জায়গার ইন্ডাস্ট্রির গল্প। 



বাংলাদেশেও কি ওয়েবের মাধ্যমে সেই ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠতে যাচ্ছে? বাংলাদেশের শুরু থেকেই কনটেন্টের মূল বিষয় সুড়সুড়ি। সিনেমার অ’শ্লীল যুগ বহু কষ্টে শেষ হয়েছে। এখন আর সিনেমায় খুব একটা অশ্লীলতা নেই। খুবই স্ট্রিক্টলি দেখা হয় বিষয়টা। তবে ওয়েব নিয়ে সরকার এখনো কেন ভাবছে না সেটা একটা প্রশ্ন। 

সেটা ভাবার মোক্ষম সময় এখন এসেছে বলে মনে হয়। তবে যাদের খুব বেশি ভাবতে হবে। তারা হলো কারা এসব কনটেন্ট নির্মাণ করছেন? কারা এতে অভিনয় করছেন? এই স্রোতে গা ভাসাচ্ছেন আমাদের নাটকের জনপ্রিয় কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী। যেমন তারা গালি দিচ্ছে, তেমনি চুমু, হ্স্তমৈথুন, যৌনতা- সব দৃশ্যতেই তারা অভিনয় করছেন। আজাদ আবুল কালাম, মৌটুসী বিশ্বাস, শ্যামল মওলা, হিল্লোল, ইমি, অর্ষা, তাসনুভা তিশা, ফারহানা হামিদ, স্পর্শিয়া, মুমতাহিনা টয়া, আবু হুরায়রা তানভীরসহ অনেক জনপ্রিয় তারকা ওয়েব সিরিজে নিজেদের এক নতুন রুপ দেখিয়েছে। এই রুপ কেন? আলোচনায় নেই, একটু আলোচনায় আসা আরকি! সময় এতটাই পরতি যে তাদের এমন দৃশ্যে অভিনয় করতে হবে? এই যে যাদের নিয়ে এমন অভিনয় করানো হচ্ছে, তাদের প্রত্যেকেরই টেলিভিশন নাটকে খারাপ সময় যাচ্ছে। 

মূল চরিত্রে অভিনয় করা হয়ে উঠছে না। আর তারই সুযোগ নিচ্ছে পরিচালকরা। এরা প্রত্যেকে পরীক্ষিত অভিনয়শিল্পী। অসংখ্য জনপ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু এই অ’শ্লীলতায় গা ভাসিয়ে জায়েজ করছেন এসব কনটেন্টকে। যেসব পরিচালকরা এসব কনটেন্ট নির্মাণ করছেন তাদেরও নাম পরিচয় কম নেই। তবে কেন তারা এমনভাবে অ’শ্লীলতার পেছনেই ছুটছে? ভিউ আর আলোচনাই যে এখন মূল বিষয়। এসব চরিত্রে অভিনয় করে অনেকেই তো আলোচনায় আসছে। কিছু কাজও মিলছে। কিন্তু সেই কাজ কতদিন? কথায় কথায় স্যা’ক্রেড গেমস, অসুর, মির্জাপুরের উদাহরণ টানা হয়। সেসব ওয়েব সিরিজ বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। সেখানে বলিউড তারকারা অভিনয় করেছেন। যৌ’নতা, গা’লি ছিলো ভরপুর। আর সেগুলো বাংলাদেশে পরিচিতি পেয়েছে বলে, ভারতের ওয়েবের যৌ’নতা দেখতে পারে, আমাদেরটা নয় কেন?- এমন প্রশ্ন করতে অনেককে দেখা যায়। তাদের তাহলে দৌড় নিয়ে চিন্তিত হতে হয়। 

 ভারতে এই দুই তিনটা ওয়েব সিরিজই সব সংস্কৃতি বহন করে না। কোটা ফ্যাক্টরির ওয়েব সিরিজগুলো দেখুন। যৌ’নতাই গল্প বলার জন্য দরকার নেই। মালায়ালাম সিনেমা দেখতে পারেন। গল্প, দৃশ্য, দৃশ্যায়ন – আপনাকে মুগ্ধ না করে পারবে না বেশিরভাগ কাজ। তাছাড়া যেসব সিরিজের উদাহরণ টানা হয়। সেখানকার যৌ’ন দৃশ্যই কেন শুধু টানা হয়? তার ক্যামেরার কাজ। গল্প বলার ঢং। সেগুলো কি আমাদের কোন ওয়েব সিরিজে করতে পারি? প্রতিটা দেশের আলাদা সংস্কৃতি আছে। ভারতের সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের সংস্কৃতিরও অনেক মিল রয়েছে। কিন্তু অমিলটাই বেশি। 

ভারতে হয়তো বাবার সঙ্গে বসে ম’দ্যপান করতে দেখা যায়। আমাদের দেশে এমনটা কয় ঘরে দেখা যাবে? আর বাংলাদেশে এত এত প’রকী’য়ার অন্যতম কারণ এই ভারতীয় সিরিয়াল। নাটক সিনেমা আমাদের সমাজে খুবই প্রভাব ফেলে। তামিল, তেলেগু কিংবা হলিউড- কোরিয়ান কোন অ্যাকশন সিনেমা দেখলে আপনারও ইচ্ছে হবে মা’রামা’রি করেন। একটু হলেও ইচ্ছে হবে। এটাই মনস্বাস্ত্বিক বিষয়। নাটক- পরিবারের সবাই মিলে টেলিভিশনে দেখা। সময় সমাজের মূল্যবোধ আর ভাবনার জায়গা তৈরী করা। কে কতটা সূচারুভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে। সিনেমা- বাণিজ্যিকরণের জন্য কিছুটা মশলা ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সেই নাটকের মানুষগুলোর এমন অবনতি সেটা সত্যিই কষ্টকর। চরিত্রের প্রয়োজন বলতে কোন কথা নেই। এটা একটা অজুহাত। ন’ষ্টামি করার অজুহাত এই চরিত্রের প্রয়োজন।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.