করোনায় মারা গিয়েছে মেয়ে, বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে ৩ ছেলে, আস্তাকুঁড়ে দিন কাটছে বিখ্যাত ব্যবসায়ীর!


Odd বাংলা ডেস্ক:  দীর্ঘ ৬ দশক ধকে হাজার হাজার শাড়ি এবং সালওয়ার কামিজ, শেরওয়ানিতে সোনালী জরির বুনটে পোশাকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী বালু রানা। কিন্তু এই করোনা মহামারি তাঁর সোনালী জরি-বোনা জীবনে এমন অন্ধকার নিয়ে আসবে এ হয়তো স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি গুজরাতের এই সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। 

একসময়ের বিখ্যাত জরি প্রস্তুতকারত তথা সফল ব্যবসায়ী ৭৫ বছর বয়সী বালু রানাকে রবিবার সুরাতের রুদ্রপুর এলাকায় একটি আবর্জনা স্তূপের পাশে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। তীব্র অযত্নে মানসিকভাবে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তাঁকে বিভিন্ন সময়ে পথচলতি মানুষের কাছে খাবার চাইতে দেখা যায়। এমনকি ডাস্টবিনের ময়লার মধ্যে থেকেও খাবার কুড়িয়ে খেতে দেখা গিয়েছে। 

জানা যায়, মাত্র এক মাস আগেই তাঁর মেয়ে কৌশল্যার মৃত্যু হয়েছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। তিন ছেলের সংসারে ব্রাত্য হয়েছেন প্রৌঢ়। ছেলেরা মিলে বাড়ি থেকে বের করে দেন নিজেদের বৃদ্ধ বাবাকে। গত ১০দিন ধরে স্থানীয় মানুষদের নজরে পড়ায় প্রাথমিকভাবে তাঁরা তাঁকে ভিখারি বলে মনে করেছিলেন। এরপর স্থানীয় সমাজসেবক পীযুষ শাহ-কে খবর দেওয়া হলে তিনি এসে তাঁর সম্পর্কে খোঁজ খবর করে জানতে পারেন, গত ৫ বছর ধরে এইভাবেই দিন কাটাচ্ছেন একদা গুজরাতের নামী ব্যবসায়ী বালু রানা। 

এমনকি এক মাস আগে পর্যন্তও তাঁর মেয়ে কৌশল্যা নিয়মিত বাবার খোঁজখবর নিত, যত্ন করত। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হয়ে মেয়ের মৃত্যুর পর প্রতিদিনের খাওয়াটাও জোটে না বৃদ্ধের। দেখারও কেউ নেই। তাঁর ছেলেরাও সুতোর জরির কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, কিন্তু বৃদ্ধ বাবাকে দু-বেলা খেতে দেওয়া এমনকি খোঁজ নেওয়ারও সময় হয় না সন্তানের। 

ক্লান্ত অবিশ্রান্ত বৃদ্ধ মানুষটি ভাঙা ভাঙা গলায় বলেন, 'আমি আমার কম বয়সে প্রতি মাসে ৫০,০০০ টাকা আয় করেছি, কিন্তু এখন সময় বদলেছে। আমার ছেলেরা পরিবার নিয়ে আলাদা আলাদা বাড়িতে থাকে, তাঁরা এই সময়ে জরির কাজ করে ভালই রোজগার করে.....' কিছুক্ষণ থেমে বৃদ্ধ আবার বলে 'দয়া করে আমাকে খেতে দেবে। আমার খুব ক্ষিদে পেয়েছ।'
Blogger দ্বারা পরিচালিত.