পরিবারের সিদ্ধান্তেই ধূলিসাৎ হয়ে গেল ভারতরত্ন বিসমিল্লা খানের স্মৃতি বিজরিত ভিটে, তৈরি হবে শপিং মল
Odd বাংলা ডেস্ক: ভারতীয় যন্ত্রসঙ্গীতে প্রবাদপ্রতিম শিল্পী ওস্তাদ বিসমিল্লা খানের সাধের বাড়িটি ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হল। উত্তরপ্রদেশে স্বনামধন্য শিল্পীর ঐতিহ্যমন্ডিত এই বাড়িটিতেই রয়েছে তাঁর সমস্ত স্মৃতি। কিন্তু সেই বাড়ি আজ বুলডোজারের চাপে ধূলিসাৎ হয়ে গেল। আর সবার আগে ভেঙে ফেলা হল তাঁর রেওয়াজের ঘরটি। জানা গিয়েছে পরিবারের সম্মতিক্রমেই ঐতিহ্যমন্ডিত এই বাড়ি ভেঙে শপিং মল গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তাঁর অসামান্য শিল্পীসত্তা তাঁকে বিশ্বের দরবারে এক বিরাট পরিচিতি করে দিয়েছে। তিনি চাইলেই কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিলাসবহুল বসবাসের সুযোগ খুব সহজেই গ্রহণ করতে পারতেন, কিন্তু তিনি আজীবন উত্তরপ্রদেশের সেই ভিটেতেই নিজেদের সারাটি জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিসমিল্লা খান ১৯৬৩ সালে বাড়িটি কিনেছিলেন। রোজ স্নান সেরে দোতলা বাড়ির উপরের ঘরে রেওয়াজ করতেন। ওই বাড়িতেই ২০০৬ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর ভক্তরা বরাবরই চেয়েছিলেন স্মৃতি বিজরিত সেই বাড়িটিকে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হোক, সেইসঙ্গে তাঁর ভিটেটিকে যেন হেরিটেজ তকমা দেওয়া হয়। কিন্তু তার জন্য কোনওরকম আগ্রহ দেখায়নি উত্তরপ্রদেশ সরকার এমনকি কেন্দ্রও। অভিযোগ, সরকারের কাছে বারবার অনুরোধ করেও কোনও লাভ হয়নি। এমনকি দিন কয়েক আগেই যখন বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়, তখনও নিষ্ক্রিয় থেকেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।ভক্তদের ইচ্ছেটুকু ইচ্ছে হয়েই থেকে গেল আর অক্লেশে ভাঙা পড়ল বিসমিল্লা খানের রেওয়াজের ঘর।
এঘটনায় উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব টুইট করেছেন, 'ইতিহাস ভেঙে যাচ্ছে, সরকারের একে রক্ষা করা উচিত।' hdjmUdi বাড়িটির মালিকানা রয়েছে বিসমিল্লা খানের পাঁচ ছেলের এক ছেলে মেহতাব হোসেনের ছেলে। তিনিই বিসমিল্লা খানের বাড়িটি ভেঙে ফেলার ক্ষেত্রে উদ্যোগী হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও এই দাবি স্বীকার করেননি। ওস্তাদজির কনিষ্ঠ পুত্র নাজিম হোসেন জানিয়েছেন, তিনি উত্তরপ্রদেশের বাইরে আছেন। কয়েক দিন পরে ফিরে খবর নেবেন।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭ সালে ১৭ হাজার টাকায় বিসমিল্লার চারটি মূল্যবান সানাই বিক্রি করে দেন তাঁর নাতি। এর মধ্যে তিনটি সানাই ছিল রুপোর। সে সময়েই প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিলেন বিসমিল্লার অনুরাগীদের একাংশ। সেবারেও প্রতিবাদ প্রতিবাদ হয়েই থেকে গিয়েছে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। বারবার পরিবারের এমন কীর্তি-কলাপে তাঁদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠলেও কোনও লাভ হয়নি। তবে ওস্তাদজির পালিতা কন্যা ও সংগীতশিল্পী সোমা ঘোষ জানিয়েছেন তাঁর ভিটে ঘরটি রক্ষার জন্য তিনি যতটুকু করা সম্ভন করবেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই তাঁর রেওয়াজের ঘরটিই ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। বাকি অংশ কি আর বাঁচানো সম্ভব হবে, প্রশ্ন রয়েই গেল।
Post a Comment