ভাত বেড়ে দিচ্ছিস না কেন? স্ত্রীকে হত্যা স্বামীর, আচমকা হাজির আরেক স্ত্রী



Odd বাংলা ডেস্ক: ভাত বেড়ে না দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দ্বিতীয় ‘স্ত্রী’-কে হত্যার করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তারপর ঝাড়খণ্ডের দুমকা থেকে প্রায় একশ ২০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায় প্রথম স্ত্রী লেবুনি চালকের কাছে গিয়ে উঠেছিলেন মহাবীর চালক ওরফে জিয়া। কিন্তু নিহত বধূ ছায়া মাজির (৩২) মরদেহ নিয়ে ভাইয়ের কাছে গিয়ে হাজির হন অভিযুক্তের ভাই। 

ব্যাপার জেনে পাড়ার লোকজনদের ডেকে স্বামীর ‘কুকর্মের’ কথা জানিয়ে দেন লেবুনি। পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। গত রবিবার রাতে পুলিশ গুসকরার বাগানপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে জিয়াকে। গতকাল সোমবার দুমকা থানার পুলিশ এসে নিয়ে যায় তাকে। পূর্ব বর্ধমানের ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) অরিজিৎ পাল চৌধুরী জানান, রবিবার রাতে গুসকরা কুনুর নদীর সেতুর নীচে প্লাস্টিকে মোড়া এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রাতেই জানা যায়, মরদেহ ছায়া মাজির। দুমকা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সোমবার অভিযুক্তকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বাড়িতে স্ত্রী এবং তিন ছেলেমেয়ে থাকলেও বছর দেড়েক আগে ভাতারের ওরগ্রামের বাসিন্দা ছায়াকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন ৩৫ বছর বয়সী জিয়া। 

মাঠের কাজ করতে করতে আলাপ হয়েছিল তাদের। ছায়ার সঙ্গে তার বছর দশেকের ছোট ছেলেও যায়। বিয়ে করে বর্ধমান, ফারাক্কার মতো বিভিন্ন জায়গা ঘুরে মাসখানেক আগে দুমকা জেলার কুসুমডি এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন তারা। জিয়া স্থানীয় একটি ইটভাটায় ট্রাক্টর চালাতেন। ওই এলাকায় থাকেন জিয়ার ভাই অর্জুন চালক। নিহত নারীর ছেলেও তার কাছেই থাকে। পুলিশ বলছে, ছায়াকে হত্যা করা হয়েছে জানার পর ২২ আগস্ট অর্জুনই দুমকা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ তার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই মরদেহ নিয়েই অ্যাম্বুল্যান্সে করে রবিবার গুসকরায় হাজির হন তিনি। কিন্তু কেউ মরদেহ নিতে রাজি না হওয়ায় গুসকরার রটন্তী কালীতলায় কুনুর নদীর সেতুর নিচে মরদেহ ফেলে রেখে তিনি পালান। যদিও অর্জুন গতকাল দাবি করেন, জিয়ার জিম্মায় ছায়ার মরদেহ দিয়েছিলেন তিনি। 

 লেবুনির দাবি, দিন তিনেক আগে সাইকেলে করে জিয়াকে বাড়িতে আসতে দেখে অবাক হয়েছিলেন। জিয়া কিছু না বললেও, রবিবার সন্ধ্যায় অর্জুন ওই নারীর দেহ আনার পর সব ফাঁস হয়ে যায়। তার দাবি, মরদেহ আনার পর আমার স্বামী পালিয়ে গিয়ে কুনুর নদীর ধারে একটা জঙ্গলে লুকিয়ে পড়ে। বৃষ্টির মধ্যে স্বামীকে খুঁজে এনে পাড়ার ক্লাবের ছেলেদের বিষয়টি জানাই। গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে জিয়া তাদের জানিয়েছেন, ভাত দেওয়া নিয়ে ঝগড়ার জেরে ছায়াকে চড় মেরে, গলা টিপে ধরেন তিনি। তাতেই ছায়া মারা যান। ছায়ার দাদা জয়দেব মেটে আউশগ্রামের দেকুরির বাসিন্দা। গতকাল দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। নিহতের প্রথম পক্ষের স্বামী কার্তিক মাজির দাবি, স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল জিয়া। গতকাল ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.