‘হোক করোনা, বউ হাসপাতালে গেলে রান্না করবে কে?’ – স্বামীর প্রশ্নে অবাক হাসপাতাল কর্মীরা



Odd বাংলা ডেস্ক: বাড়ির প্রধান গৃহকর্ত্রীর শরীরে ধরা পড়েছে করোনা ভাইরাস। পাশাপাশি সংক্রমিত হয়েছেন পরিবারের আরও ৩ জন। এই খবর পেতেই রিষড়া পুরসভার কর্মীরা পৌঁছন ওই বাড়িতে। বাড়ির আশেপাশের এলাকায় কনটেইনমেন্ট করার পাশাপাশি আ’ক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানোর উদ্দেশে। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁদের যা অভিজ্ঞতা হল, তা বোধহয় ভোলা মুশকিল। 

পুরকর্মীদের কাছে কাকুতিমিনতি করলেন বাড়ির কর্তা। তাঁর অনুরোধ, তাঁর স্ত্রীকে বাড়িতেই রাখা হয়। বদলে পরিবারের অন্য কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হোক। কিন্তু গৃহকর্তার কেন এমন অনুরোধ? পুরকর্মীদের এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর স্বামী স্পষ্ট গলায় প্রশ্ন তুললেন, বউ হাসপাতালে গেলে বাড়িতে রান্না করবে কে? যা শুনে কার্যত স্তম্ভিত হয়ে যান পুরকর্মীরা। পরে অবশ্য করোনা আক্রান্ত গৃহবধূর চিকিৎসা হয়। রিষড়া পুরসভার এক কর্মীই এই পরিবারের কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ওই পরিবারের ৪ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। 

তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য গিয়েছিলেন পুরকর্মীরা। সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে শুনে মুখ কাঁচুমাঁচু হয়ে যায় বাড়ির কর্তার। তিনি পুরকর্মীদের অনুরোধ করেন, অন্যদের নিয়ে যাওয়া হোক, কিন্তু তাঁর স্ত্রীকে যেন বাড়িতেই রাখা হয়। এমন আবদার শুনে পুরকর্মীরা প্রথমে একটু বিরক্ত বোধ করেন। পরে তাঁকে প্রশ্ন করতেই বেরিয়ে আসে আসল কথা। স্বামী বলেন, ”ও চলে গেলে বাড়িতে রান্না করার কেউ থাকবে না।” একথা শুনে বিস্ময় যেন আর কাটতেই চায় না তাঁদের। 

এমন ঘটনার সাক্ষী ছিলেন রিষড়া পুরসভার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভাগের দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার। তিনি গৃহকর্তাকে বোঝান যে করোনা আক্রান্ত গৃহবধূকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েই চিকিৎসা করাতে হবে। নাহলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে আরও। গৃহকর্তা নিজেও সংক্রমিত হবেন। তা সত্ত্বেও নাছোড় গৃহবধূর স্বামী। শেষমেশ অবশ্য খানিকটা জো’র করেই ওই মহিলাকে স্বামীর কাছ থেকে নিয়ে গিয়ে কো’য়ারেন্টাইন সেন্টারে প্রথমে রাখা হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.