বিবাদ বা জট কাটাতে আইন-আদালত নয়, এই গ্রামের মানুষরা দেবতার দ্বারস্থ হন, মাথা পেতে মেনে নেন দেবতার রায়
Odd বাংলা ডেস্ক: কোনো জটিলতা বা বিবাদ সৃষ্টি হলে সকলে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে থাকেন, কিন্তু আজ আপনাদের এমন এক গ্রামের কথা জানাব যেখানকার মানুষ কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলে আদালতের দ্বারস্থ হন না, তাঁদের সব সমস্যার সমাধানের জন্য তাঁরা ঈশ্বরের শরণাপন্ন হন। উত্তরাখণ্ডের জানসার বাওয়ার অঞ্চলের মানুষরা সুবিচার পেতে আদালত নয়, স্থানীয় দেবতার দ্বারস্থ হন।
জানসার বাওয়ার এলাকার ৩৬০টি গ্রামের মানুষরা এমন বিচারের ওপরেই আস্থা করে আসছেন। এমনকি স্থানীয়দের মধ্যে এখানকার মানুষদের মহাভারতের পাণ্ডবদের বংশধরও বলা হয়। এক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়া একেবারে সাধ্যের মধ্যেই। বিচার পেতে আবেদনকারীকে জমা দিতে হবে মাত্র ১০ টাকা। এরপর একজন নির্বাচিত ব্যক্তি ১৪ দিনের মধ্যেই বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে ফেলেন। যিনি বিচারের রায়দেন, তিনি হলেন 'সায়ানা'। রায়দান হয়ে গেলে স্থানীয় মহাসু দেবতার সামনে দাঁড়িয়ে বাদী এবং বিবাদী পক্ষ সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বিচার ব্যবস্থার এই পদ্ধতিটি সেখানকার ৩৬৭টি গ্রামে স্বীকৃত। এই প্রক্রিয়াকে 'খুমদী' বলে থাকে স্থানীয় বাসিন্দারা। ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার নিদর্শন এই গ্রামে আজও রয়েছে, কারণ এইসব গ্রামগুলি রেভিনিউ পুলিশের অধীনস্থ। এই খুমদী বিচার ব্যবস্থায় যেকোনও রকমের পারিবারিক বিবাদ, জমি জট সবকিছুরই বিচার মেলে। মানুষের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য মাসে একবার বা দুবার করে খাত-পঞ্চায়েত বৈঠক বসে, আর প্রতিটি বৈঠকে ১০টি পর্যন্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। মামলায় রায়দানের আগে নির্বাচিত ব্যক্তি তথা 'সায়ানা' ৮-১০টি গ্রামের সদস্যদের নিয়ে গঠিত খাত পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই রায়দান করেন।
Post a Comment