আফগান শান্তি আলোচনা ব্যর্থ করতে নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে পাকিস্তান?



Odd বাংলা ডেস্ক: আফগান সরকার ও তালেবান বিদ্রোহীদের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করেছিল। তবে হঠাৎ অজানা কারণে সেই প্রক্রিয়া থমকে গেছে। প্রশ্ন উঠছে আচমকা কেন থমকে গেল শান্তি আলোচনা? শান্তি প্রক্রিয়া ব্যর্থ করতে নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে কারা? গত ১৮ জুলাই ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই এ সম্পর্কিত ইউরোপীয় থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তীব্র তালেবান-সহিংসতার সঙ্গে দোহায় আন্তঃ-আফগান আলোচনাকে ব্যর্থ করার ক্ষেত্রে নেপথ্যে পাকিস্তানের ভূমিকা রয়েছে। 

ইউরোপীয় ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (ইএফএসএএস) রিপোর্ট অনুসারে, তালেবানের সহিংসতা বৃদ্ধির পেছনে পাকিস্তানের জড়িত থাকার বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তালেবানের শান্তি আলোচনা সফলতা পাবে যদি সেখান থেকে পাকিস্তান যথেষ্ট পরিমাণে লাভের অধিকারী হয়। যখন শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তখন তালেবানকে অবশ্যই সহিংসতা পরিহার করতে হবে। এটা শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে তালেবানকে সহিংসতা থেকে দূরে থাকা উচিত। এই থিংক ট্যাঙ্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কাউন্সিলের (সিএফআর) লিখিত কাগজপত্রও উদ্ধৃত করেছে। যেগুলোতে আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতার পেছনে পাকিস্তানের ভূমিকার বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, 'তালেবানের কোয়েটা শূরা বা সিনিয়র সামরিক নেতৃত্ব কাউন্সিল পাকিস্তানে বসবাস অব্যাহত রেখেছে যারা আফগান যুদ্ধকে সমর্থন করে। সিএফআর এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান যদি স্থগিত শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের নন-ন্যাটো মিত্রের মর্যাদা স্থগিত বা সমাপ্ত করার বিষয়ে বিবেচনা করতে পারে। এছাড়া ওয়াশিংটন পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকদের তালিকায় রাখার বিষয়টিও বিবেচনা করতে পারে। সর্বোপরি আমেরিকা ও অন্যান্য পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো লস্কর-ই তৈয়েবা থেকে আফগানিস্তানের তালেবান ও ভারতে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক সম্পর্কে প্রচুর তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। মার্চ মাসে যে শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল সেটা আপাতত স্থগিত রয়েছে। 

তালেবানরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হওয়ার পরেই কেবল আন্ত: আফগান আলোচনা শুরু হবে। এদিকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তালেবান একাধিক হামলায় কয়েকশ সরকারী বাহিনী ও বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে। উপরোক্ত ঘটনাবলি দেখে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক জানিয়েছে যে,পাকিস্তান আসলে চায় কাবুলে তার প্রভাববলয় সংহত করতে। এজন্য দেশটি চাওয়া তাদের মদদপুষ্ট তালেবান সরকার কাবুলে প্রতিষ্ঠিত হোক। অন্যদিকে ভারত চায় পাকিস্তানি প্রভাবমুক্ত আফগানিস্তান। আফগানিস্তানে তালেবান–নিয়ন্ত্রিত কট্টর ইসলামি সরকার প্রতিষ্ঠা হোক, এটা ভারতের কাম্য নয়। সুতরাং, শান্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের আগে পাকিস্তান শেষ খেলাটি তালেবানদের দিয়েই খেলতে চায় এবং কাবুলে তাদের প্রভাববলয়ের তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত করাই ইসলামাবাদের উদ্দেশ্য।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.