রাইট ব্রাদারস নয়, প্রথম বিমান উড়িয়েছিলেন রাবণ, দাবি শ্রীলঙ্কার, শুরু গবেষণা
Odd বাংলা ডেস্ক: বিমান আবিষ্কারের কাহিনী নিশ্চয় জানেন। ছোটবেলা থেকেই সাধারণ জ্ঞান বইয়ে আবিষ্কারের তালিকায় থাকা বিমানের প্রথম আবিষ্কারকের নাম নিশ্চয় পড়েছেন! রাইট ভাতৃদ্বয়ের কথা মনে আছে তো। যে প্রকৌশলী দুই ভাই মিলে তৈরি করেছিলেন বিশ্বের প্রথম উড়োজাহাজ। অরভিল রাইট এবং উইলবার রাইট ১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রথম নিয়ন্ত্রিত, শক্তিসম্পন্ন এবং বাতাসের চেয়ে ভারী সুস্থিত মানুষ-বহনযোগ্য উড়োজাহাজ তৈরি করেন।
পরবর্তী দুই বছর তারা তাদের উড়ন-যন্ত্রটিকে অনড়-পাখাবিশিষ্ট উড়োজাহাজে রূপান্তরিত করেন।
তবে এই তথ্য ভুল প্রমাণের দাবি এবার শ্রীলঙ্কার সরকারের। তাদের দাবি পাঁচ হাজার বছর আগে রাবণ প্রথম উড়িয়েছিলেন বিমান। রামায়ণের কাহিনী অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার শাসক ছিলেন রাবণ। আকাশপথেই তিনি সীতাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন। সনাতন ধর্ম মতে, রাবণকে দানব রূপে দেখা হলেও শ্রীলঙ্কায় রাবণকে ঘিরে নানা রহস্যময় লোকগাঁথা রয়েছে।
দ্বীপরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাজা হিসেবে রাবণকে সেখানে শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়।
তেমনই শ্রীলঙ্কার মানুষের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিমান পরিবহণের পথিকৃতও ছিলেন রাবণই! এর আগে অবশ্য ভারতের দাবি ছিল, সাত হাজার বছর আগেই নাকি বিমান উড়িয়েছিলেন রামায়ণের আরেক চরিত্র রাম। অনেকের ধারণা, প্রাচীন ভারতের ঋষি প্রায় সাত হাজার বছর আগেই বিমান আবিষ্কার করেছিলেন। সে বিমানটি যে কোনো নির্দেশে উড়তে ও চলতে পারত এমনকি গ্রহ থেকে গ্রহে যেতে পারতো। প্রাচীন বেদেও এর প্রমাণ মিলেছে।
ভারতের মুম্বাইয়ে ইন্ডিয়ান সাইন্স কংগ্রেসে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত ট্রেনিং পাইলট ক্যাপ্টেন আনানদ জি বোদাস বলেন, প্রাচীন বেদের লেখার হরফগুলো বেশ পুরনো। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তা সাত হাজার বছরের বেশি পুরনো নয়।
বেদে বিমান গ্রহ থেকে গ্রহে উড়ার সম্পর্কে বলা হয়েছে। এমন বৈজ্ঞানিক ত্রুটিপূর্ণও অকল্পনীয় মতবাদের দাবিতে দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, দর্শক-শ্রোতারা বিস্মিত হয়েছেন।
ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হার্শা বর্ধন বলেন, পিথাগোরাসের থিওরি ভারতের আবিষ্কার হলেও গ্রিকরা এর কৃতিত্ব নিয়ে গেছে। এছাড়াও বর্তমানের অনেক বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত আবিষ্কার বহু শতাব্দী আগে ভারতে হয়েছে, এমন বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবও হাজার হাজার বছর আগে ভারতে ইন্টারনেটের প্রচলন ছিল এমন তথ্য আবিষ্কার করে বসেছিলেন।
যা নিয়ে চলছে নানা তর্ক বিতর্ক।
তবে বিমান নিয়ে যে নতুন দাবি করেছে শ্রীলঙ্কা তা নিয়ে চলছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গবেষণার কাজ। এবার এই দাবিকেই স্বীকৃতি দিতে চায় শ্রীলঙ্কার সরকারও। সে জন্য বিস্তারিত তথ্যানুসন্ধান ও গবেষণা চালিয়ে নিজেদের দাবির পক্ষে আরো প্রমাণ জোগাড় করতে মরিয়া তারা।
এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কা সরকারের পর্যটন ও বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। সেখানে সাধারণ মানুষের থেকে রাবণ সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য, বই প্রমাণ আকারে থাকলে তা শ্রীলঙ্কার অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে আবেদন করা হয়েছে।
রাজা রাবণ এবং আকাশপথে আধিপত্য হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য শীর্ষক বিষয়ে গবেষণা চালানো হবে বলে বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের বিনিময়ে পর্যাপ্ত অর্থ দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বিজ্ঞাপনে। এর আগে ভারতের বিমান নিয়ে করা দাবিতে নানাজন নানা মত দিয়েছিলেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট এবং টাইমস অব ইন্ডিয়ায় এ ব্যাপারে প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, আমরা যদি বিজ্ঞানকে নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরতে না পারি। তাহলে আমরা শুধু বিজ্ঞানের সঙ্গে প্রতারণা করবো তা নয়। আমাদের প্রজন্মের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করবো।
Post a Comment