স্কুলের নাম 'ঢেমনচক', বলতে লজ্জা পায় ছাত্র-ছাত্রীরা, শুনতে গালাগালির মতন, পরিবর্তনের দাবি



Odd বাংলা ডেস্ক: ঘটনা বাংলাদেশের। ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম নিয়ে প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। প্রায় ৫০ বছর ধরে বিকৃত এসব নাম থাকলেও ডিজিটাল যুগে পরিবর্তন চায় শিক্ষার্থীরা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বওলা ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম রামসোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাইটকান্দি ইউনিয়নে দুটি বিদ্যালয়ের নাম মাড়া দেওরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম মাড়া দেওরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছনধরা ইউনিয়নের বেসরকারি রেজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম রামসোনা রাখা হয়েছে। 

এ ছাড়া রূপসী ইউনিয়নে পাগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে রয়েছে আরো একটি বিদ্যালয়ের নাম। পাশাপাশি আরও একটি বিদ্যালয়ের নাম রয়েছে ঢেমনচক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরেজমিনে এসব বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, ১৯৭৩ সাল থেকে বিকৃত এসব নাম বিদ্যালয়ের দেওয়ালে লেখা। বিদ্যালয়ের নাম নিয়ে অনেক সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রিয় বিদ্যালয়ের নাম বলতে লজ্জা বোধ করেন। 

তাদের দাবি, বর্তমান ডিজিটাল যুগে নামগুলো পরিবর্তন করে শ্রতিমধুর নাম দেওয়া অতি জরুরি। জানা যায়, স্থানীয়রাসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসব নাম পরিবর্তন করার জন্য দাবি জানালেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি নিয়ে তেমন ভাবনা না থাকায় যুগযুগ ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করতে হচ্ছে এমন বিকৃত নামের প্রতিষ্ঠান থেকে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, অচিরেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নাম প্রস্তাবের জন্য নতুন করে আবেদন করা হবে। 

মাড়া দেওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়েশা খাতুন জানান, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে কথা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসাবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এ স্কুলের শিক্ষার মান ভালো থাকলেও নাম নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিব্রত পড়তে হয় অনেক সময়। শিক্ষার্থীরা জানায়, অনেক সময় বিদ্যালয়ের নাম বলতে লজ্জা হয়। মুখ ঢেকে প্রিয় প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে হয়। 

অনেকেই মজা করে এ নাম নিয়ে। শিক্ষাবিধ অধ্যাপক আবু তাহের জানান, বর্তমান যুগে এ ধরনের নামের জন্য শিক্ষার্থীরা মনে কষ্ট পায়। নাম পরিবর্তন করলে শিক্ষার্থিদের আত্মাবিশ্বাস আরো বাড়বে। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ফুলপুর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম কবীর দিদার জানান, শিক্ষার্থীদের জন্য বিব্রত নাম পরিবর্তন করে শ্রুতিমধুর নাম দেওয়া অতি জরুরি। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক সমিতি কাজ করবে। 

 উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতা জিয়াউর রহমান পান্না জানান, বর্তমানে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুন্দর ও আধুনিক ভবন তৈরি করে লেখাপড়ার পরিবেশ তৈরি করছেন। সরকারের বিভিন্ন সহায়তায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। এমন বিকৃত নাম পরিবর্তন করা জরুরি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলপুর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শরিফ খান কালের কণ্ঠকে জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হবে।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.