AK 47 হাতে কিশোরীর বীরত্বে 'সাহস' পাচ্ছেন আফগানরা


Odd বাংলা ডেস্ক: তালিবান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে 'বীরত্ব' প্রদর্শন করে সর্বত্র আলোচনায় আফগান কিশোরী কামার গুল। তালিবান জঙ্গিদের হামলায় গুলের বাবা-মা মারা যাওয়ার পর অস্ত্র হাতে একাই প্রতিরোধ করে জঙ্গিদের খতম করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির 'নায়ক' এখন কিশোরী কামার গুল। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে, কামার গুলের (১৫) বীরত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছিল। জানা যায়, বাবা-মাকে হত্যার বদলা নিতে মুহূর্তে বাবার একে -৪৭ রাইফেল হাতে তুলে নেন কামার গুল। 

গুলি করে দুই জঙ্গিকে হত্যা করে ও আরো বেশ কয়েকজনকে আহত করে। কামার গুলের বীরত্বের গল্প বিদ্যুৎগতিতে ছড়িয়ে পড়ে আফগানিস্তানের সর্বত্র। কয়েক দশকের যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের মানুষ এখন কামার গুলের বীরত্বে সাহস খুঁজে পাচ্ছে। এটাকে তারা তালিবান যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আত্মবিশ্বাসের টনিক হিসাবে মনে করছে। রাজধানী কাবুলের ৩০ বছর বয়সী ফরহাদ ওমর বলেছেন, 'আমি যখন তার সাহসীকতার কথা শুনেছি তখন আমি তার জন্য গর্বিত হয়েছি, আমাদের তার মতো শক্তিশালী মেয়ে রয়েছে। আফগানিস্তানের তার মতো নায়কদের দরকার।' 




 রাজনীতি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ২৫ বছর বয়সী আহমদ তুর্কমেন বলেছেন, 'কামার আফগান নারীদের শক্তি বৃদ্ধি এবং আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন। গতকাল এটি ছিল মালালা, আজ কামার গুল। আফগানরা ঘুরে দাঁড়াবেই। কাবুলের গৃহকর্মী আইমা সুলতানি (২৭) বলেছেন, ‘কামাল গুলের মধ্যে মালালার আত্মপ্রকাশ হয়েছে। গুলের এমন সাহসীকতা পুরো বিশ্বকে মনে করিয়ে দেয় যে, আফগান নারীরা এখনো সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করার সাহস রাখে।‘ কামার এনবিসি নিউজকে জানিয়েছেন যে, তার পরিবার ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল, সেসময় তালিবান জঙ্গিরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে গুলি করে তার বাবা-মা'কে হত্যা করেছিল। 

গুল বলেন, আমাকে বাবার বন্দুক হাতে তুলতে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে আমি গর্ববোধ করি যে আমি আমার বাবা এবং মাকে হত্যা করেছে এমন তালিবানকে হত্যা করেছি।‘ এমন একটা ঘটনার পর তালিবানরা ছেড়ে দেবে, এটা ভাবা ভুল। ঘটনার পরপরই তারা এসেছিল প্রতিশোধ নিতে। কিন্তু গ্রামবাসী ও সরকারপন্থি মিলিশিয়াদের প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটে। আবারও যে আসবে না, তা জোর দিয়ে বলা যায় না। 

তাই কামার গুল ও তার ছোট ভাইকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী। আফগান কন্যার এই বীরত্বের খবর প্রকাশ হতেই চারদিকে প্রশংসার বৃষ্টি। মাথায় ফেট্টি বাঁধা, মেশিনগান হাতে কামার গুলের ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

 তালিবান অধ্যুষিত আফগানিস্তানে জঙ্গিদের এমন অত্যাচার নতুন নয়। যখন যাকে সরকারের চর হিসেবে সন্দেহ হয়, তাকেই তুলে নিয়ে গিয়ে তালিবানরা প্রাণে মেরে ফেলে। আফগানিস্তানে শান্তিচুক্তির পরেও অস্ত্র ত্যাগ করেনি তালিবান জঙ্গিরা। সম্প্রতি একাধিক হামলায় বহু আফগান নিরাপত্তারক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন। তবে কিশোরী কামার গুলের এমন সাহসীকতায় এবার আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাচ্ছেন আফগানরা।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.