শান্তিনিকেতনের চিনা ভবনের ২০০ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত



Odd বাংলা ডেস্ক: শান্তিনিকেতনের চীনা ভবনের প্রায় ২০০ ছাত্র-ছাত্রীর দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়। কারণ, ভারত-চীন সম্পর্কের দোটানায় তাঁদের ভবিষ্যৎ হয়ে উঠেছে অনিশ্চিত। জুন মাসের ১৫ তারিখে লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর ভারত-চীন সম্পর্ক প্রায় তলানিতে। ভারত সরকার ইতিমধ্যে অনেক চায়নিজ অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে। তা ছাড়া দেশে বিভিন্ন জায়গায় চীনের তৈরি পণ্য বর্জন করছে সাধারণ মানুষ। 

 আর এ ঘটনায় বিশ্বভারতীর চীনা ভবনের কর্মকর্তারা চীনের যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে তাঁদের সমঝোতা ছিল, তাদের সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। চীনা ভবনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীনের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে পড়াশোনা সংক্রান্ত সহযোগিতার। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে সব যোগাযোগ বন্ধ। আমরা এমনকি কোনো ওয়েবিনারও করছি না। চীনা ভবনের প্রায় ২০০ ছাত্র-ছাত্রী চীনা ভাষায় স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করেন। তা ছাড়া অনেক রিসার্চ স্কলার এবং পিএইচডির ছাত্র-ছাত্রীও রয়েছেন। 'এসব ছাত্র-ছাত্রী কখনো চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে যেতেন বা কখনো অনলাইনে চীনের শিক্ষকদের কাছ থেকে পাঠ নিতেন, এখন সব বন্ধ।' 

জানিয়েছে একটি সূত্র। ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে সেই দেশের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত এবং ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ খুব জরুরি; কিন্তু সেই সুযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই চিন্তিত। 'চীনা ভবন থেকে পাস করে অনেকে খুব ভালো চাকরি পেয়েছেন গত কয়েক বছরে, কারণ চীনের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁরা সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তো আর সেই সুযোগ পাব না।' জানান এক ছাত্র। ইতিমধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এক সার্কুলার জারি করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে জানাতে বলেছে, কোন কোন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের সমঝোতা রয়েছে। চীনা ভবনের এক কর্মকর্তা জানান, এই সার্কুলার আসলে চীনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাদের কাদের সমঝোতা আছে তা খতিয়ে দেখার জন্যই করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চীনা ভবনের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ সত্যিই অনিশ্চিত। 

কারণ চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সহযোগিতা ছাড়া ওদের শিক্ষা অপূর্ণ থাকবে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে ১৯৩৭ সালে শান্তিনিকেতনে এই চীনা ভবন প্রতিষ্ঠা হয়। তারপর চীন সরকারের সহযোগিতায় চীনা ভবন উৎকর্ষতার শিখরে পৌঁছেছে। 'চীনা ভবনের এই উৎকর্ষতার জন্য আমি চীনা ভাষা শিখতে শান্তিনিকেতনে এলাম। কিন্তু জানি না ভবিষ্যতে কী হবে?' জানান এক ছাত্র।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.