৩৬ ঘণ্টা শৌচাগারে পড়ে রইল মৃতদেহ, টের পেল না ছেলে-বৌমা, ফের বেআব্রু শহর জীবনের একাকিত্বের চেহারা

 

Odd বাংলা ডেস্ক: মৃত্যু অমোঘ। কিন্তু নয়ের দশকের বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্তের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে কার্যত হতবাক সকলে। টানা ৩৬ ঘণ্টা ধরে তাঁর মৃতদেহ বাথরুমের শৌচাগারে পড়ে থাকে। একই বাড়িতে থেকেও মায়ের মৃত্যুর খবর টেরও পেলেন না শর্বরী দত্তের ছেলে-বৌমা। ৬৩ বছর বয়স্ক স্বনামধন্য এই ডিজাইনারের এমন করুণ পরিণতিতে টলিউডের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। 

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাড়ির শৌচাগার থেকে তাঁর শায়িত দেহ উদ্ধার করার পর ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নীলরতন সরকাল মেডিকেল কলেজে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে অনুসারে, মস্তিষ্কে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের জেরেই মৃত্যু হয়েছে ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্তের। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা আধিকারিকদের দাবি, ময়নাতদন্তের পর অটোপসি সার্জেনরা খুন বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দিয়েছেন।

তবে ময়না তদন্তের রিপোর্টে এও বলা হয়েছে যে, তাঁর মৃত্যু হয়েছে উদ্ধার হওয়ার প্রায় ২৪ ঘণ্টা আগে! আর ময়নাতদন্তের প্রায় ২৭ ঘণ্টা আগে। তাঁর ছেলে অমলিন দত্তের দাবি, তাঁরা সকলেই যে যাঁর কাজে ব্যস্ত থাকেন, এমন বহুবার হয়েছে যে, মায়ের সঙ্গে তাঁর ২-৩দিন দেখা হয়। বৃহস্পতিবার সারাদিন তাঁকে ফোনে না পেয়ে তিনি ভেবেছিলেন মা হয়তো কাজে ব্যস্ত। 

প্রসঙ্গত, শুক্রবার শর্বরী দত্তের একটি ফ্যাশন শ্যুটের জন্য লোকেশন দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। শ্যুটের আয়োজকরা বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বার বার ফোন করেও পাননি, অবশেষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখনই তাঁর ছেলে এবং বৌমা শর্বরীর খোঁজ করতে গিয়ে তাঁকে শৌচাগারে পড়ে থাকতে দেখেন। তাহলে কি, শ্যুটের আয়োজকদের ফোন না এলে তাঁর দেহ কি ওই অবস্থায় আরও বহুক্ষণ পড়ে থাকত? ছেলে এবং বৌমা যদি আরও আগে তাঁর খোঁজ করতেন তাহলে কি তাঁকে বাঁচানো যেত? এই ঘটনায় ফের প্রকাশ্যে এল নগরজীবনের একাকীত্বের ছবিটা। জমজমাট শহরে থেকেও শূন্যতা গ্রাস করেছিল শর্বরী দত্তকে এমনটাই দাবি করেছেন তাঁর বন্ধুরা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.