ফিনসেন ফাইলস: অবশেষে জানা গেল ভারত থেকে বেরিয়ে যাওয়া ব্ল্যাক মানি আজ কোথায়?
Odd বাংলা ডেস্ক: ২০১৩ সালে অফশোর কেলেঙ্কারি, ২০১৫-তে সুইস ব্যাংককাণ্ড, ২০১৬-তে পানামা ব্যাংক কেলেঙ্কারি, ২০১৭ সালে প্যারাডাইস পেপারকাণ্ডের পর এবার প্রকাশ্যে 'ফিনসেন ফাইল'। যার মাধ্যমে বিশ্ব অর্থপ্রবাহে ভারতীয়দের গোপন অংশীদারির তথ্য উন্মোচিত হয়েছে।
প্রায় দুই হাজার নথির ওপর অনুসন্ধান চালিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থপ্রবাহে ভারতীয়দের গোপন তথ্যের সন্ধান মিলেছে। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের নজরদারি সংস্থা ফিন্যানশিয়াল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কে (ফিনসেন) এই গোপন কারবার ধরতে পেরেছে।
সন্দেহজনক ক্রিয়াকলাপ নথিগুলোকে সাসপিসিয়াস অ্যাকটিভিটি রিপোর্টস বা এসএআর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো ফিনসেন-ই গঠন করে থাকে। তবে সেগুলোকে বেআইনি কার্যকলাপের প্রমাণ নয়, বরং এগুলো ব্যাংক, তার সম্মতি প্রদানকারী কর্মকর্তা, অতীতের বিভিন্ন লেনদেন, বিভিন্ন গ্রাহকের নানা বিষয়ের খতিয়ান, যা অর্থনৈতিক অপরাধকে সূচিত করে।
বিশ্বের ৮৮টি দেশের ১০৯টি সংবাদ প্রতিষ্ঠান মার্কিন নজরদারি সংস্থার রিপোর্ট পেয়েছে। এসএআর-এ ১৯৯৯-২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয়দের গোপন লেনদেনের উল্লেখ রয়েছে। নাম রয়েছে ডয়েচ ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, সিটি ব্যাংক, জেপি মরগ্যানের। এসএআর-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই লাখ কোটি ডলারেরও (২ ট্রিলিয়ন) বেশি অবৈধ অর্থ লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাংকগুলো।
ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদরা ব্যাংকিং চ্যানেলকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে সম্পত্তির কর ফাঁকি দেন বা তার দেশান্তর ঘটান, এসএআর প্রতিবেদনে তার বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।
গত তিন মাস এসএআর রিপোর্টে নজর রেখেছে দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। দেখা গেছে, যেসব সংস্থা বা ব্যক্তির নাম এসএআর রিপোর্টে উঠে এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে ভারতীয় সংস্থাগুলো। ফিনসেনে উল্লেখ রয়েছে, ২-জি কেলেঙ্কারি, অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার দুর্নীতি, রোলরয়েস ঘুষ কেলেঙ্কারি, এয়ারসেল ম্যাক্সিস অপরাধ।
এ ছাড়া কর ফাঁকি সংক্রান্ত নানা অপরাধের তথ্যও সেখনে ঠাঁই পেয়েছে। উল্লেখ্য, এসব মামলার তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই, ইডি বা রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেট।
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসেরে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গছে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত হীরা ব্যবসায়ী, প্রথমসারির স্বাস্থ্য পরিষেবা সংস্থা, ঋণখেলাপি স্টিল সংস্থা, গাড়ির ডিলারসহ আর্থিক অপরাধে যুক্ত ব্যক্তি বা সংস্থার নাম ফিনসেন পেপারে উল্লেখ রয়েছে। আইপিএলের একটি টিমের স্পন্সরের নামও তালিকায় রয়েছে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভারতীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ শাখাগুলো তহবিল গ্রহণ বা প্রেরণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয় ব্যাংকের বিদেশি শাখার সঙ্গে ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোও এই লেনদেন পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক, কোটাক মহিন্দ্রা, এইচডিএফসি, কনাড়া ব্যাংক, অন্ডাসইনড ব্যাংক, ব্যাংক অব বরোদা এগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এ
সএআর রিপোর্টে ভারত থেকে ‘সন্দেহজন’ ৩,২০১টি লেনদেনের উল্লেখ রয়েছে। লেনদেন হয়েছে মোট ১.৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
Post a Comment