অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে আমাকে বলেছিলেন 'অনেক তো পেয়েছি, তোমাদের সাহায্য নেব কেন?'



বিক্রম পাঠক: মৃত্যুর ৮ বছর আগে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র একবার এসেছিলেন মুর্শিদাবাদের নিমতিতার ভারত সেবাশ্রম সংঘের মাঠে। যাঁর কন্ঠ মহালয়ার ভোরে শুনি, তাঁকে দেখার ইচ্ছা হয়েছিল খুব। কিন্তু তাঁকে যখন দেখলাম, তখন একটু অবাক হলাম। রুগ্ন দেহ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন মানুষটা। শরীর ভেঙে গিয়েছে একদম। 

সেবার তাঁর পা ছুয়ে প্রণাম করার ভাগ্য হয়েছিল আমার। কিন্তু একটু সাহস দেখিয়ে আমি একটা কাজ করে ফেলেছিলাম। তাঁকে বলেছিলাম যদি অনুমতি দেন তাহলে আমরা ক্লাবের তরফে কিছু সাহায্য এগিয়ে দিতে পারি। 

কিন্তু শিল্পী যে কখনই কারও কাছে মাথা নিচু করে না সেটা আমি ভুলে গিয়েছিলাম। আমার হাত থেকে কাগজটা নিয়ে তাতে অটোগ্রাফ দিতে দিতে আমার দিকে হেঁসেছিলেন। বলেছিলেন 'অনেক তো পেয়েছি, আবার তোমাদের কাছ থেকে সাহায্য নেব কেন?'। এতটাই আত্মভিমানী মানুষ ছিলেন তিনি। 

আমি কিন্তু তারপরেও থেমে থাকিনি। সেসময়ের একটি বেসরকারি সংবাদপত্রে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছিলাম তাঁর ঠিকানা তারা জানেন কিনা। সংবাদপত্রের জবাবে জানতে পারলাম তাঁর সেই বাড়ির ঠিকানা। প্রায় ৬ বার চিঠি লিখেছি নানান ভাবে, যদি তাঁকে কোনও ভাবে সাহায্য করতে পারি। কিন্তু কোনও দিনও তাঁর জবাব আসেনি। হয়তো সব চিঠিই তিনি পড়তেন। কিন্তু তারপর হয়তো হেঁসে নিজে নিজেই বলতেন 'অনেক তো পেয়েছি'।  

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.