৫০০ বছর ধরে জাপানি পুরুষরা পালন করছে ‘উলঙ্গ উৎসব’



Odd বাংলা ডেস্ক: আজব সব রীতি-নীতিতে চলছে বিশ্ব! যা আপনার বা আমার কাছে অবাক করা বিষয় তা হয়ত অন্যদের কাছে পরিচিত বিষয়! বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রীতি-নীতিতে পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। 

তাই বলে এ কেমন আজব উৎসব যে, নেকেড ফ্যাস্টিভ্যাল বা উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ানো। তাও আবার একজন দুইজন নয় হাজারো পুরুষ। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন! 

এখনো হাড় কাঁপানো শীত সূর্য উদয়ের দেশ জাপানে। তার মধ্যে উলঙ্গ হয়ে অসংখ্য পুরুষের জমায়েত মন্দিরের সামনে। একটাই প্রার্থনা, দেশের কৃষি জমি যেন উর্বর থাকে। শস্যে শ্যামল হয় ক্ষেত। এটাই জাপানি রীতি। 



জাপানের ৫০০ বছরের পুরনো নেকেড ফেস্টিভেল বা উলঙ্গ উৎসব শেষ হয়েছে। যুগ যুগ ধরে বছরের দ্বিতীয় মাসের তৃতীয় শনিবার সে দেশে ঘটা করে পালন করা হয় নেকেড ফেস্টিভেল বা উলঙ্গ উৎসব। এবারেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। নেংটি  আর মোজা পরে এবারের নেকেড ফ্যাস্টিভেলে ১০ হাজারের বেশি পুরুষ অংশ নিয়েছিলেন। 

কী হয় সেই উৎসবে? হাদাকা মাৎসূরী নামে খ্যাত এই উৎসবে সাইদাইজি কান্নোনিন মন্দিরে জড়ো হন জাপানি পুরুষেরা। এই উৎসবে হাজার হাজার উৎসুক জনতা উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় নেমে পরে। 

পুরোপুরি উলঙ্গ বললে ভুল হবে, তখন তাদের গোপনাঙ্গের সামনে একটি ছোট্ট সাদা কাপড় দেয়া থাকে শুধু। স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় সময় উৎসব পালনে যোগ দেন সবাই। লাখো মাথার ভিড়ে গমগম করতে থাকে মন্দির প্রাঙ্গণ। এই ফসল উৎসব আগামী প্রজন্মকে কৃষির প্রতি আকৃষ্ট করার জন্যই।  

উৎসবের অংশ হিসেবে, পুরুষরা কয়েক ঘণ্টা মন্দিরের মাঠের চারপাশে দৌড়াদৌড়ি করেন। তারপর জমাট বাঁধা বরফ জলে স্নান করে নিজেকে শুদ্ধ করে মূল মন্দিরের দিকে যান।

এরপর মন্দিরের পুরোহিত অনুষ্ঠানটির আয়োজকেরা একজন পুরোপুরি উলঙ্গ মানুষকে ছেড়ে দেয় প্রার্থনালয়ের সামনে থেকে হাজার হাজার নেংটি পড়া দর্শকদের মাঝে। 

তাদের মধ্যে কথিত আছে, একবার যে ওই উলঙ্গ ব্যক্তিকে দৌড়ে ধরতে পারবে তার মঙ্গল হবে পরের বছর। আর সে জন্যই উলঙ্গ বেচারাকে ধরার জন্য রীতি মতো যুদ্ধ বেঁধে যায় চারদিকে।  

ওকায়ামার পর্যটন বোর্ডের মুখপাত্র মিকো ইটানো জানিয়েছেন, জাপানি ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শনার্থীরাও এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তাদের আশা, আগামী প্রজন্ম বিশ্বাস রাখবে এই উৎসবে। ভবিষ্যতেও ধরে রাখবে যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই ঐতিহ্যকে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.