একেই বলে প্রেম, স্ত্রীর শোকে ৩০ বছর বাঁশঝাড়ে



Odd বাংলা ডেস্ক: বিচ্ছেদ সবার জন্যই কষ্টের। অনেকে প্রিয়জনের বিচ্ছেদ মানতে পারেন না। তার জন্য সারা জীবন শোকে কাতর থাকেন। এজন্য বিশ্বের অনেকে করেছেন অদ্ভুত সব কাণ্ড। এবার জানা গেল এমনই একজনের কথা। যিনি কিনা তার প্রিয়তমা স্ত্রীর বিয়োগ মানতে পারেননি। তাই স্ত্রীর বিয়োগ শোকে ৩০ বছর কাটিয়েছেন বাঁশঝাড়ে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। বাঁশঝাড়ে বিষধর গোখরো, কাঠবিড়ালি ও পাখিদের সঙ্গে মিলেমিশে বাস করেছেন শোকে কাতর এক স্বামী। তিনি বর্ধমান শহরের অদূরে পালিতপুর গ্রামের রায়পাড়ার বাসিন্দা লকু রায়। 

স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। প্রায় ৩০ বছর আগে লকুর স্ত্রী সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। এরপর লকু ঘর সংসার ছেড়ে বাঁশ বাগানে আশ্রয় নেন। তারপর ধীরে ধীরে বাঁশের ওপর মাচা করে ঘর তৈরি করে সেখানেই দিন-রাত পড়ে থাকেন। লকুর এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। তাদের বড় করেছে লকুর মা। এই গ্রামেই তার বাড়ি। কখনো ইচ্ছে হলে সেখানে যান। এছাড়া বাকি সময় এখানেই কাটান তিনি। লকুর ইচ্ছা জীবনের বাকি ক‌টা দিন এই বাঁশঝাড়ের ওপরই কাটিয়ে দেবেন। 

বাঁশ বাগানে তিনি থাকছেন টানা ৩০ বছর ধরে। সিমেন্টের বস্তা ও পলিথিনের টুকরো দিয়ে বাঁশঝাড়ের ওপরে মাচা করে একটি ছোট্ট ঘর বানিয়ে নিয়েছেন। দিনের আলোতে এক রকম, রাতের অন্ধকারে থাকেন একমাত্র ছোট্ট একটি টর্চের আলোতে। লকু পেশায় দিনমজুর। কাজ থাকলে ভালো আর কাজ না থাকলে তার ছোট্ট এক ফালি জমিতে পানির নালা বানিয়ে মাছ ধরার ব্যবস্থা করেছেন। নিজের ধরা সেই মাছের ঝাল-ঝোলেই তৃপ্তি পান নিঃসঙ্গ লকু। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ঘর-সংসার ছেড়ে এক প্রকার এখানে সন্ন্যাস জীবন কাটাচ্ছেন ৫৫ বছর বয়সী লকু।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.