অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর স্বপ্ন পূরণে বাইকে করে দিলেন ১২০০ কিলোমিটার পাড়ি!
Odd বাংলা ডেস্ক: ঝাড়খণ্ড রাজ্যের আদিবাসী তরুণ ধনঞ্জয় মাঝি স্কুটারে (বাইক) করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে ১২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মূলত স্ত্রী সোনি হেমব্রমের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতেই এই দুঃসাধ্য কাজ করেছেন তিনি।
শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেতে ভারতে ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন নামের একটি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। সোনির পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে। করোনাভাইরাসের কারণে এখনও সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক না হওয়ায় বিপাকে পড়ে যান তিনি। দারিদ্র্যের কারণে ট্যাক্সি ভাড়া করে যাওয়াও সম্ভব ছিল না তার পক্ষে। তবে স্বামী ধনঞ্জয় তার শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চেয়েছেন।
ধনঞ্জয় পেশায় একজন রাঁধুনি। কিন্তু লকডাউনের জেরে এখন পুরোপুরি বেকার হয়ে পড়েছেন। এত পথ পাড়ি দেওয়ার জ্বালানির টাকা জোগাড় করাও তার জন্য বেশ কঠিন ছিল। স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে জ্বালানির টাকা জোগাড় করতে হয়েছে। ঝাড়খণ্ড থেকে সফর শুরু করে বিহার, উত্তরপ্রদেশ হয়ে গ্বালিয়রে পৌঁছান তারা।
ধনঞ্জয় জানান, তিনদিন ধরে স্কুটার চালিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছেছেন। তবে তার এই সফর খুব সুখকর ছিল না। সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল তেমনি পরীক্ষাকেন্দ্রেও যথাসময়ে পৌঁছনোর প্রয়োজন ছিল। কোথাও প্রবল বৃষ্টির মুখে পড়তে হয়েছে। কখনও বিহারের বন্যাকবলিত এলাকার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। মুজফফরপুরে রাত কাটিয়েছেন একটি লজে। আবার লখনউয়ে রাত কাটাতে হয়েছে টোল প্লাজায়। এভাবেই তিনদিন ধরে সফর করেছেন ধনঞ্জয়।
ধনঞ্জয়ের স্ত্রী সোনি বলেন, ‘অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। একটা সময় এমনও হয়েছে যে পিঠে ও কোমরের ব্যথার জন্য স্কুটার থেকে নেমে হেঁটেছি। প্রবল বৃষ্টিতে গাছের নিচে আশ্রয় নিয়েছি। সব কষ্ট সহ্য করেও স্বামীর অনুপ্রেরণায় পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে পরীক্ষা দেওয়াটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিল। নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পেরেছি। এখন শিক্ষিকা হয়ে স্বামীর স্বপ্ন পূরণ করাই একমাত্র লক্ষ্য।
Post a Comment