ভয়ঙ্কর মুত্যুদণ্ড! অপরাধীর শরীরে মধু মাখিয়ে পোকামাকড়কে খেতে দেয়



Odd বাংলা ডেস্ক: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অপরাধের শাস্তির ভিন্নতা রয়েছে। একেক দেশ বা জাতি তাদের নীতি মেনে অপরাধীর শাস্তির ব্যবস্থা করে। একেক অপরাধের জন্য একেক রকম শাস্তি। 

তবে অনেক শাস্তির বিবরণ শুনলে হয়তো আপনার গায়ে কাটা দিয়ে উঠবে। ভাবছেন এতো কঠিন আর নির্মম শাস্তি জেনেও কেন সেখানকার মানুষ অপরাধে জড়ায়? আসলে অপরাধ মানুষ নানা কারণেই করে থাকে।

যাই হোক আজকের লেখায় থাকছে তেমনই এক ভয়াবহ শাস্তির কথা। যদিও এটি এখনকার দিনের নয়। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর কাছাকাছি সময়ে পার্সিয়ান সাম্রাজ্যে ভয়াবহ সব শাস্তি দিয়ে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত। 



নৌকায় ভাসিয়ে দেয়া

এর মধ্যে একটি ছিল কাঠের তৈরি নৌকায় অপরাধীকে তুলে শাস্তি দেয়া। যতদিন পর্যন্ত তার মৃত্যু না হত ততক্ষণ বা ততদিন তাকে সেখানেই বেঁধে রাখা হত। ভাবছেন এ তো খুব সাধারণ ব্যাপার। তবে না এখনো বলতে বাকি আছে, শুধু যে ছোট্ট একটি নৌকায় বেঁধে জলে ভাসিয়ে দিত, তাই নয়। 

তাদের মাথা, হাত এবং পা থাকত নৌকার বাইরে। যাতে জলে থাকা কুমির তাদের কামড়ে খেয়ে ফেলতে পারে। এছাড়াও একটি গাছ মাঝ থেকে চিরে তার ভেতর অপরাধীকে বেঁধে ঢুকিয়ে দেয়া হত। কতটা নৃশংস এবার তবে ভেবে দেখুন!

এসময় তাদের খাওয়ানো হত দুধ আর মধুর মিশ্রণের একটি পানীয়। অতিরিক্ত এই পানীয় খাওয়ার ফলে তাদের ডায়রিয়া আর বমি হত। ওইভাবে নৌকায় বাধা অবস্থায় তারা বমিও করত আবার পায়খানাও করত। প্রচণ্ড গন্ধ পেয়ে বুনো ইঁদুরের দল এই বমির জন্য তাদের কাছে চলে আসত। আর মল-মূত্রের সঙ্গে তাদের শরীর থেকে মাংস খেয়ে ফেলত। এভাবেই ধীরে ধীরে মারা যেত অপরাধীরা। 



স্ক্যাফিজম

সে সময়ের আরো একটি ভয়াবহ শাস্তি ছিল স্ক্যাফিজম। অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর তার শরীরে মধু মেখে ফেলে রাখা হত। যাতে পোকামাকড় তার শরীরে কামড়াতে পারে। সেখানেই তারা বংশবিস্তার করত। আর মধুর সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীর শরীর থেকে মাংস খেয়ে ফেলত। এছাড়াও ক্ষুধা তৃষ্ণার যন্ত্রণা তো রয়েছেই। ধীরে ধীরে মৃত্যু হত অপরাধীদের। 

এই স্ক্যাফিজম শাস্তি পেয়েছিল সেময়কার এক পারস্য সৈন্য। সময়টা খ্রিস্টপূর্ব ৪০১ সালের দিকে, মিথ্রিডেটস নামে একজন পারস্য সৈন্য দ্বিতীয় রাজা আর্টেক্সারেক্সেসের ছোট ভাই সাইরাসকে হত্যা করেছিল। আর্টেক্সারেক্সেস নিজেই সাজিয়েছিলেন এই হত্যার পরিকল্পনা। তিনি পুরষ্কার ঘোষণা করেছিলেন এই হত্যাকাণ্ডের জন্য। 



কুনাক্সার যুদ্ধে দুই ভাইয়ের মধ্যে যুদ্ধ হয়। রাজার কথা মতো মিথ্রিডেটসের একটি তীর লাগে তার ভাই সাইরাসের গায়ে। সঙ্গে সঙ্গেই মারা যান সাইরাস। আর্টেক্সারেক্সেস সৈনিককে পুরষ্কৃত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে তা ভুলে গিয়ে মিথ্রিডেটসকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মিথ্রিডেটসকে স্ক্যাফিজম শাস্তি দেয়া হয়।  

গ্রীক প্রাবন্ধিক এবং জীবনীকার প্লুটার্কের মতে, মিথ্রিডেটস মৃত্যুর আগে ১৭ দিন এই নির্যাতন সহ্য করেছিলেন। সেসময় হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের মতো জঘন্যতম অপরাধের শাস্তি ছিল স্ক্যাফিজম। যেটি ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। ইতিহাসবিদরা বলেন, এমন শাস্তির উদাহরণ এর আগের কোনো শতাব্দীতে পাওয়া যায়নি। তবে কে এই ধরনের ভয়াবহ শাস্তির উপায় বের করেছিলেন তা আজো জানা যায়নি।   
Blogger দ্বারা পরিচালিত.