অসহায় হিন্দু বৃদ্ধার মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন মুসলিমরা!


Odd বাংলা ডেস্ক: অসহায় বৃদ্ধা অমলা ঘোষের দিন কাটছে একটি বাড়ির খোলা বারান্দায়। তার খাওয়া-দাওয়া জোগাচ্ছেন সোনাই খাতুন, রসুল শেখরা। ধর্মের উর্ধ্বে মানবতাকে স্থান দিয়ে সম্প্রীতির এক অনন্য নজির দেখা গেল র পূর্ব বর্ধমান জেলার দাইহাট শহরে। শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোকামপাড়ায় গত চার মাস ধরে একটি বাড়ির খোলা বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছেন সত্তর ছুঁইছুঁই অমলা ঘোষ। বার্ধক্যের কারণে আর পরিশ্রম করার ক্ষমতা নেই। তাই দু’মুঠো খাবারের অপেক্ষায় বসে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই। তবে ওই বৃদ্ধাকে এখনো অনাহারে থাকতে হয়নি। 

কারণ মুসলিম অধ্যুষিত মোকামপাড়ার লোকজনই পালা করে অমলা ঘোষের খাবার পৌঁছে দিয়ে আসছেন এই কয়েকমাস ধরে। দাঁইহাট শহরের বেড়া শিবতলাপাড়ায় বাড়ি ছিল অমলা ঘোষের। প্রায় ১৮ বছর আগে স্বামী মারা যান। নিঃসন্তান মহিলার তিনকূলে কেউ নেই। বাপেরবাড়ি দাঁইহাট শহরেই। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পরে তার বাপেরবাড়ির ভিটাও বিক্রি হয়ে যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পরে তাই উপায়ন্তর না দেখে অমলাদেবী চলে যান পাঞ্জাব। সেখানে রান্নার কাজ করে নিজের পেট চালাচ্ছিলেন। বছর দেড়েক আগে অমলা চলে আসেন দাঁইহাটে। কিন্তু কোথায় উঠবেন। তাই ঘোরাঘুরি করেই কাটছিল। স্থানীয় বাসিন্দা বাবন ঘোষ বলেন, 'দেড় বছর আগে পাঞ্জাব থেকে ফিরে আসার পর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন তিনি। 

আমাদের এলাকার কয়েকজন মিলে কিছু টাকা দিয়ে অমলা দেবীকে ফের পাঞ্জাবে ফিরে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করি। কারণ পাঞ্জাবে তাঁর পরিচিত রয়েছেন। কিন্তু তার কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি ফের ফিরে আসেন। মাস সাতেক আগে ফেরার পর থেকে আর কোথাও যাননি।' প্রায় চার মাস ধরে দাঁইহাট মোকামপাড়ায় আশ্রয় নিয়েছেন একটি বাড়ির বারান্দায়। মোকামপাড়ার বাসিন্দা রসুল শেখ, সোনাই খাতুনরা বলেন, 'ওই অসহায় বৃদ্ধা আমাদের পাড়ায় আশ্রয় নেওয়ার পর এখান থেকে আর কোথাও যাননি। লকডাউনের সময় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করার মতো পরিস্থিতি নেই। তাই আমাদের পাড়ার লোকজনরা পালা করে খাবার পৌঁছে দিয়ে আসে তাঁকে।' মোকামপাড়ার বাসিন্দারা চাইছেন সরকারিভাবে কোনো আশ্রয়স্থলে রাখার ব্যবস্থা করা হোক অসহায় বৃদ্ধা অমলা ঘোষকে।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.