২০১৯ সালেই দেশে আত্মহত্যা করেছেন ৪২,৪৮০ কৃষক-দিনমজুর, তখন করোনার নামমাত্র ছিল না


Odd বাংলা ডেস্ক: ২০১৯ সালে যখন করোনার নামমাত্র কেউ শোনেনি, সেই বছর সারা দেশে আত্মহত্যা করেছেন দেশের ৪২ হাজার ৪৮৯ জন কৃষক এবং দিনমজুর। পরিসংখ্যানটি তার আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

সর্বশেষ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্ট অনুসারে, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু এবং আত্মহত্যার ঘটনায় ২০১৯ সালে ১০,২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৮ সালে সংখ্যাটা ছিল ১০,৩৫৭। অন্যদিনে দিনমজুরের মৃত্যুর সংখ্যা ৩১,১৩২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২,৫৫৯ জন। এনসিআরবি-র তথ্যে আরও জানানো হয়েছে, কৃষক ও দিনমজুরের আত্মহত্যা দেশের মোট আত্মহত্যার ৭.৪ শতাংশ। যেখানে, কৃষি ক্ষেত্রে ১০ হাজারের বেশি আত্মঘাতীর মধ্যে কৃষকের সংখ্যা ৫৯৫৭ জন এবং ৪৩২৪ জন হলেন খেতমজুর। কৃষক আত্মহত্যার ক্ষেত্রে মেয়েদের থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছেন পুরুষদের সংখ্যা। ২০১৯ সালে ৫৫৬৩ পুরুষ কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। মহিলা কৃষকের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা হল ৩৯৪ জন।

অন্যদিকে, খেতমজুরদের মধ্যেও পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে যথেষ্ট ফারাক রয়েছে। খেতমজুরদের মধ্যে ৩,৭৪৯ জন পুরুষ আত্মহত্যা করেছেন আর মহিলাদের মধ্যে আত্মঘাতী ৫৭৫ জন। কৃষি ক্ষেত্রে আত্মহত্যার নিরিখে শীর্ষ রয়েছে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, পশ্চিমবঙ্গে কোনও কৃষক আত্মহত্যা করেননি বলেই উল্লেখ করেছে এনসিআরবি। প্রতিবেদন অনুসারে, আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া কৃষকদের ২৩.৩ শতাংশ দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। আর ৩.৭ শতাংশ কৃষক স্নাতক।

২০১৯ সালে সমগ্র ভারতে মোট ১লক্ষ ৩৯ হাজার ১২৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। ২০১৮ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন ১লক্ষ ৩৪ হাজার ৫১৬ জন। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশি। ৫৩.৬ শতাংশ মানুষ গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন ২৫.৮ শতাংশ। আর জলে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৫.২ শতাংশ মানুষ।

আত্মহত্যার কারণ হিসেবে সবার ওপরে রয়েছে পারিবারিক অশান্তি। পরিসংখ্যান বলছে, মোট আত্মহত্যার সিংহভাগই (৩২.৪ শতাংশ) পারিবারিক বিবাদের জেরে ঘটেছে। কেবল বৈবাহিক জীবনের অশান্তির হাত থেকে মুক্তি পেতে আত্মহত্যা করেছেন ৫.৫ শতাংশ মানুষ। এছাড়া রোগ-ভোগের যন্ত্রণা থেকে চিরতরে মুক্তির জন্য আত্মহত্যা করেছেন ১৭.১ শতাংশ।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.