চাল,ডাল, আটা নয়, ১ লক্ষ বছর ধরে মানুষ খেয়ে আসছে আলু!



Odd বাংলা ডেস্ক: সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রিটিশ একদল প্রত্নতত্ত্ববিদ দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব কেপ প্রদেশের ক্লাসিয়েস নদীর বদ্বীপে কয়েকটি গুহায় দগ্ধ হওয়া মূল এবং কন্দ জাতীয় খাবারের অবশিষ্টাংশ অবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। এর থেকে এক অদ্ভূত তথ্য দিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা।

প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বছর আগের মানুষ শর্করাজাতীয় খাবার হিসেবে আলুর মত কন্দজাতীয় খাবার গ্রহণ করে থাকতো বলে জানা গেছে। সম্প্রতি এক প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। হিউম্যান এভোলিউশন নামক জার্নালে এই গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়।

আবিষ্কৃত পোড়া এই খাবারগুলো মেসোলিথিক বা মধ্য প্রস্তর যুগের বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই আবিষ্কার থেকে ধারণা করা হচ্ছে, প্রাচীন মানুষ শিকারের পাশাপাশি শিকড় এবং কন্দ জাতীয় খাবারও রান্না করে খেতো।

প্রসঙ্গত, মধ্য প্রস্তর যুগে শিকারের সরঞ্জাম এবং কলা-কৌশলের উন্নতি ঘটলেও মানব সম্প্রদায় মাটির নীচে উৎপন্ন হওয়া সবজিও রান্না করতো। গবেষকরা জানান, প্রাচীন কাল থেকেই মানুষের মধ্যে সুষম খাবার গ্রহণের অভ্যাস তৈরি হয়েছিল। সাম্প্রতিক এই আবিষ্কার সেটিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এছাড়া সেসময়ের মানুষের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলার যে প্রবণতা দেখা গেছে তা তাদের পরিবেশগত বুদ্ধিমত্তারই পরিচয় দিচ্ছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাচীন মানুষ মাছ এবং মাংসের মাধ্যমে কেবল আমিষ এবং চর্বি গ্রহণ করতো। এদিকে রান্না করা শর্করাজাতীয় খাবার থেকে তারা পটাসিয়াম এবং পলিস্যাকারাইড(এক ধরনের শর্করা) গ্রহণ করতো। এর ফলে তাদের খাদ্যাভ্যাসে ভারসাম্য সৃষ্টি হতো। উল্লেখ্য, মানুষের কৃষিকাজ শুরুর আগে থেকেই তারা এই খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত ছিল বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

এদিকে গবেষোণা কাজে নেতৃত্ব দেয়া ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সিনথিয়া লারবে জানান, এর আগে জেনেটিক এবং জীবতাত্ত্বিক বিভিন্ন প্রমাণ থেকে দেখা গেছে মানুষ অনেক আগে থেকেই শর্করা জাতীয় খাবার খেতো কিন্তু এই বিষয়ে এধরনের গবেষণা এর আগে কখনো করা হয়নি। মধ্য প্রস্তর যুগে উদ্ভিদ এবং আগুন যে মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো তা এই গবেষণায় প্রতীয়মান হয়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.